১৯৭১ ইং সাল।খুলনার বানিয়াখামার পশ্চিম পাড়া প্রাইমারী স্কুলে চতুর্থ শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেণীতে উঠেছি মাত্র।তখন চারিদিকে মিছিল শ্লোগান দিতে শুনতাম।একমাত্র বড় ভাই ছাড়া অন্য ভাই বোনদের ঘড়ের বাহিরে যাবার অনুমতি ছিলো না।সম্ভবত বই পত্রও কেনা হয়ে গিয়েছিল।তবে স্কুলে যাওয়া বন্ধ, বাড়িতে তেমন কারো তদারকিও নাই। সবাই আতংকে।তখনকার শেখ মুজিব আজকের বংগবন্ধু জাতীর জনকের ভাষণ শুনতে একমাত্র NECওয়ান ব্যান্ড রেডিও নিয়ে বাড়ি এবং আশে পাশের বড়োদের উত্তেজনা দেখেছি।একদিন দেখলাম বড় ভাই এবং তার বন্ধুরা মিলে মাঠে লাঠি দিয়ে ট্রেনিং নিতে।কিছুই বুঝতাম না। আশে পাশের দু'এক বাড়ির লোকজন গ্রামে চলে যেতে লাগলেন।একদিন খালু খালান্মা এসে মাকে বল্লেন আমরা চলে যাতি ঠিক করেছি বুবু ,তোমরাও চলো আমাদের ইতনার বাড়িতে এখানে থাকলে বাচতি পারবানানে।মা-বাবা রাজি হলেন না।খালুজান খালান্মা ও বোন ভাইদের নিয়ে চলে গেলেন।আমরা একা হয়ে গেলাম।ঘড়ের জানলা দিয়ে পাকিস্তানি মিলিটারিদের গল্লামারি রেডিও স্টেশনে রাইফেল তাক করে যাওয়া আসা করতে দেখতাম।
২৫শে মাচ' রাতে ঢাকায় অনেক মানুষ মারতে শোনার পর থেকে আতংকে সবার ভেতর হীম-শীতল নীরবতা।আব্বার চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না।দুপুরের দিকে আবার সবার ভেতর চঞ্চলতা দেখা দিলো।মেজর জিয়ার ভাষণ শুনার জন্য বড়োদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখেছি,বুঝতাম না কি কারন।পরে দু'দিন সন্ধ্যায় আব্বাকে কারা গোপন খবর দিয়ে গেলে দু'বার বাড়ি ছেড়ে কাছেই ইকবাল নগরে এক মামার বাসায় রাত কাটিয়ে তেমন কিছু না হওয়ায় ফিরে এলাম।আতংকে দিন কাটতে থাকে।একদিন গভীর রাতে গুলির শব্দ পেয়ে ঘুম ভাংগে।আব্বা সবাইকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘড় ছাড়লেন।পালিয়ে গেলাম অনেক দূরে।সকাল হতে ভীষণ যুদ্ধ শুরু হয় দুপক্ষে।জীবনের প্রথম গোলগুলির শব্দ।পরের দিন ফিরে এসে পেলাম পোড়া বাড়ি শুধু স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফেটে চৌচীর ঘড়ের দেওয়াল।
সব হারিয়ে দিশেহারা আব্বার আট জনের কাফেলা নিয়ে ছুটে চলা।রুপসা ম্যাচ ফ্যাক্টরীর কাছে পরিচিত একবাসায় রাতে আশ্রয়।পরের দিন সকালে নদী পার হয়ে বাগেরহাট পিরোজপুর,হুলারহাট হয়ে থমকে যেতে হলো ঝালোকাঠিতে।আব্বার পরিচিত জনেরা আর যেতে দিলেন না।মুলাদীতে নৌবাহিনী ঢুকে পড়ে হামলা করছে।পাকিস্তানি মিলিটারী তখনও ঝালোকাঠিতে ঢুকে নাই।ভালো কাটছিল একেবারে অজানা অচেনা নতুন পরিবেশে।কিছু দিন যেতে না যেতেই সারি সারি গানবোট নিয়ে গাবখান নদী পথে এসে হাজির পাকিস্তান হানাদার।নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম।সন্ধ্যায় শুরু হলো শহরে অগ্নি-সংযোগ হত্যা।পরের দিন নদীতে লাশ।শুনেছিলাম পাকিস্তান মিলিটারিরা গ্রামের চেয়ারম্যানকে বলেছিল যুবক ছেলে ধরে দিতে।তিনি পারবেন না প্রয়োজনে একমাত্র নিজের ছেলে দিতে পারেন জানিয়েছিলেন। হানাদারেরা তা-ই চাইলেন। তাই সে তার একমাত্র ছেলেকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে ছেলর লাশ খুজতে লাগলেন নদীর পাড়ে।নদীতে নামা বন্ধ।বড় ভাই ঘরের বাহির হতে পারে না যদি কেহ ধরিয়ে দেয় এই ভয়ে।অল্প ক'দিনের ভেতর আতংকে বড় ভাই রক্ত আমশয় আক্রান্ত। কোনো কিছুতে ভালো হয় না। অগত্যা আবার খুলনায় ফেরা।আশ্রয় নিলাম খালাম্মাদের টালির ঘড়ে।তাতেও কোনো উন্নতি নাই।খবর পাই, যে খালুজান আমাদের নিয়ে শংকিত ছিলেন নিজের এবং খালাম্না ভাই বোনদের জীবন বাচানোর জন্য সবকিছু ছেড়ে গ্রামে গেলেন।একদিন পাক হানাদারের হাতে নিজের গ্রামে নিজের বাড়িতে শাহাদাত বরন করলেন।
দেশ স্বাধীন হলো।চারদিকে সাহায্য দেওয়ার কথা শুনেছি আমাদের কাছে তা আসেনি।আব্বা একের পর এক বাড়ি বিক্রি করতে লাগলেন পানির দামে। উদ্দেশ্য আমাদের বাচিয়ে মানুষ করা।নাহ ! হেরে গেছেন আমাদের ভালো ভাবে দেখে যেতে পারেন নি।দেখেছি ছাতু চোর, কম্বল চোর, টিন চোর।দেখেছি লাল বাহিনী, রক্ষীবাহিনী।একুশের রাত্রে দেখেছি ছদ্দবেশী বোরকাপড়া চরম-পন্থি/নাকি সব্ব'হারা।দেখেছি চুয়াত্তরের দুভী'ক্ষ।দেখেছি যে নেতার জন্য জান বাজী রেখে যুদ্ধ করেছে হানাদার বাহিনীর সাথে।যার জন্য আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ তাকে সহপরিবারে সবাইকে নৃশংশ ভাবে হত্যা করতে।দেখলাম একই ভাবে আরেক বীর সেনানী জেনারেল জিয়াকে হত্যা করতে।বিডিআর এর পিলখানায় বীর সেনানীদের পৈশাচিকভাবে হত্যা করতে।এভাবেই দেখলাম ষড়যন্ত্র আর ক্ষমতার দ্বন্দে হারিয়ে যেতে হাজার হাজার মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী।
আজকে চারিদিকে দৃশ্যমান অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু নীতি নৈতিকতা চরমতম অবনতি ঘটছে। সবারই মাঝে কেবলই লোভ আর লোভ। শুধু চাই আরো চাই।নিজের ছাড়া অন্য কাহারো কথা ভাবতে সময় নেই কারো।চারিদিকে শুধু অবিশ্বাস।কারো প্রতি কারো শ্রদ্ধা ভক্তি নাই।একটু সুখের আশায় পাড়ি দিচ্ছে মৃত্যু উপতক্যায় এ দেশেরই সন্তান।দেশে বিচারহীনতায় আছে গুম খুন ধষ'ণ, প্রকাশ্যেই চলছে নৃশংসতার উন্মুত্ত নারকীয় উল্লাস,অর্থ লুটের মহা-উতসব।আছে বাহারি ব্যবস্থা ক্রসফায়ার।সবকিছুই স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী।স্বাধীনতার স্বপ্ন যেনো ফিকে হচ্ছে দিন দিন।আগে ভাবতাম এতো মানুষ মরেছে তাদের মতো আমি মারা গিয়েও যদি আব্বার ব্যাবসা ধন সম্পদ থেকে যেতো আব্বা আম্মাকে এতো কস্ট করতে হতো না।শুধু মনের ভেতর ছিলো একটা আফসোস মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যুদ্ধ করতে না পারায়।স্বাধীনতায় নিজের কোনো ভুমিকা না রাখার।
বড় হয়ে আজ যখন জানতে পারি বংগবন্ধু ভারতের নেতা নেহেরুর কাছে সম্মানজনক সাহায্য চেয়েছিলেন আমদের সংগ্রামে।অদু'দশী নেতা তিনি জানতেন ভারত সাহায্যে করবেই তাদের নিজের প্রয়োজনে পাকিস্তান ভেংগে দু টুকরো করতে।দেশ স্বাধীনের পর পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে দেশে এসে মিত্র বাহিনীকে অতি দ্রুততম সময়ে ফেরত পাঠালেন। কারো প্ররোচনায় উদ্ভুদ্ধ না হয়ে ইসলামি সম্মেলনে যোগদান করে সদ্য স্বাধীন দেশের স্বাধীনচেতা সাহসী যোগ্য নেতার পরিচয় দিয়েছিলেন।কৃতজ্ঞতাতো তারই থাকার কথা বেশী।অথচ আমরা তার উত্তরসুরি আমাদের নেত্রীত্ব আজ অতি মাত্রা কৃতজ্ঞতার ভারে নতজানু।এতো বেশী ভদ্র ,এতো বেশী অমায়িক কোনো কিছুই দাবী করে আনতে পারে না আর কেহ কিছু চাইলে নাও বলতে পারে না ।
একদিকে সীমান্তে কাটা তারের বেড়া।উজানে অভিন্ন নদীতে বাধ দিয়ে পানি ভারতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া।ওপারে চল্লিশ লক্ষ জাতীয় নিবন্ধনহীন বাংলা ভাষা-ভাষী জড়ো করে পুশ ব্যাক করার হুমকি।সীমানা প্রাচীরের কাছাকাছি হলেই বাংলাদেশীদের গুলি করে চোরাকারবারী বলে চালিয়ে দেওয়া।বিজেপি নেতাদের খুলনা থেকে সিলেট পয্য'ন্ত সীমান্ত এলাকা দাবী।ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ বিরোধী কম'কান্ড ও ভুমি ভারতের দাবী করা সমাবেশ উসাহিত করা।বন্ধুতের দোহাই দিয়ে না চাইতে সব কিছু পাবার পরেও আগরতলা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশের ভুখন্ড পাওয়ার আবদার।বাংলাদেশের জাতীয় অনুষ্ঠানে নিজেদের নিল'জ্জ্য অংশীদার হওয়ার বাসনা।রোহিঙ্গাদের নিয়ে বামা'র সংগে বাংলাদেশের যখন টানাপোড়ন সম্পর্ক তখন বামা'কে সাবমেরিন দিয়ে সাহায্য করা।দেশের ভেতর ভারতভুক্তির জন্য প্রাথ'না সহ কিছু অতিউতসাহী জনদের সাম্প্রদায়ীক সম্প্রিতি নষ্ট করার অপচেস্টা।আমরা বলছি ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু ।এ কেমন পরীক্ষিত বন্ধু ? কেন আমদের সংশ্লিষ্ট রথী মহারথীদের হিমশীতল নিরবতা? কেনো নেই শক্ত প্রতিবাদের ভাষা ? সবকিছুই রহস্যজনক !
আজ তাই এতো দিনের বয়ে বেড়ানো বড়ো কষ্টটা ঝেড়ে ফেলে ভুলে যেতে চাই সব।কোনো আফসোস রাখতে চাই না মনে, একাত্ররে ছোট্ট থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যুদ্ধে না যাওয়ার।
https://youtu.be/IQPUPWUqv48
২৫শে মাচ' রাতে ঢাকায় অনেক মানুষ মারতে শোনার পর থেকে আতংকে সবার ভেতর হীম-শীতল নীরবতা।আব্বার চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না।দুপুরের দিকে আবার সবার ভেতর চঞ্চলতা দেখা দিলো।মেজর জিয়ার ভাষণ শুনার জন্য বড়োদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখেছি,বুঝতাম না কি কারন।পরে দু'দিন সন্ধ্যায় আব্বাকে কারা গোপন খবর দিয়ে গেলে দু'বার বাড়ি ছেড়ে কাছেই ইকবাল নগরে এক মামার বাসায় রাত কাটিয়ে তেমন কিছু না হওয়ায় ফিরে এলাম।আতংকে দিন কাটতে থাকে।একদিন গভীর রাতে গুলির শব্দ পেয়ে ঘুম ভাংগে।আব্বা সবাইকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘড় ছাড়লেন।পালিয়ে গেলাম অনেক দূরে।সকাল হতে ভীষণ যুদ্ধ শুরু হয় দুপক্ষে।জীবনের প্রথম গোলগুলির শব্দ।পরের দিন ফিরে এসে পেলাম পোড়া বাড়ি শুধু স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফেটে চৌচীর ঘড়ের দেওয়াল।
সব হারিয়ে দিশেহারা আব্বার আট জনের কাফেলা নিয়ে ছুটে চলা।রুপসা ম্যাচ ফ্যাক্টরীর কাছে পরিচিত একবাসায় রাতে আশ্রয়।পরের দিন সকালে নদী পার হয়ে বাগেরহাট পিরোজপুর,হুলারহাট হয়ে থমকে যেতে হলো ঝালোকাঠিতে।আব্বার পরিচিত জনেরা আর যেতে দিলেন না।মুলাদীতে নৌবাহিনী ঢুকে পড়ে হামলা করছে।পাকিস্তানি মিলিটারী তখনও ঝালোকাঠিতে ঢুকে নাই।ভালো কাটছিল একেবারে অজানা অচেনা নতুন পরিবেশে।কিছু দিন যেতে না যেতেই সারি সারি গানবোট নিয়ে গাবখান নদী পথে এসে হাজির পাকিস্তান হানাদার।নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম।সন্ধ্যায় শুরু হলো শহরে অগ্নি-সংযোগ হত্যা।পরের দিন নদীতে লাশ।শুনেছিলাম পাকিস্তান মিলিটারিরা গ্রামের চেয়ারম্যানকে বলেছিল যুবক ছেলে ধরে দিতে।তিনি পারবেন না প্রয়োজনে একমাত্র নিজের ছেলে দিতে পারেন জানিয়েছিলেন। হানাদারেরা তা-ই চাইলেন। তাই সে তার একমাত্র ছেলেকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে ছেলর লাশ খুজতে লাগলেন নদীর পাড়ে।নদীতে নামা বন্ধ।বড় ভাই ঘরের বাহির হতে পারে না যদি কেহ ধরিয়ে দেয় এই ভয়ে।অল্প ক'দিনের ভেতর আতংকে বড় ভাই রক্ত আমশয় আক্রান্ত। কোনো কিছুতে ভালো হয় না। অগত্যা আবার খুলনায় ফেরা।আশ্রয় নিলাম খালাম্মাদের টালির ঘড়ে।তাতেও কোনো উন্নতি নাই।খবর পাই, যে খালুজান আমাদের নিয়ে শংকিত ছিলেন নিজের এবং খালাম্না ভাই বোনদের জীবন বাচানোর জন্য সবকিছু ছেড়ে গ্রামে গেলেন।একদিন পাক হানাদারের হাতে নিজের গ্রামে নিজের বাড়িতে শাহাদাত বরন করলেন।
দেশ স্বাধীন হলো।চারদিকে সাহায্য দেওয়ার কথা শুনেছি আমাদের কাছে তা আসেনি।আব্বা একের পর এক বাড়ি বিক্রি করতে লাগলেন পানির দামে। উদ্দেশ্য আমাদের বাচিয়ে মানুষ করা।নাহ ! হেরে গেছেন আমাদের ভালো ভাবে দেখে যেতে পারেন নি।দেখেছি ছাতু চোর, কম্বল চোর, টিন চোর।দেখেছি লাল বাহিনী, রক্ষীবাহিনী।একুশের রাত্রে দেখেছি ছদ্দবেশী বোরকাপড়া চরম-পন্থি/নাকি সব্ব'হারা।দেখেছি চুয়াত্তরের দুভী'ক্ষ।দেখেছি যে নেতার জন্য জান বাজী রেখে যুদ্ধ করেছে হানাদার বাহিনীর সাথে।যার জন্য আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ তাকে সহপরিবারে সবাইকে নৃশংশ ভাবে হত্যা করতে।দেখলাম একই ভাবে আরেক বীর সেনানী জেনারেল জিয়াকে হত্যা করতে।বিডিআর এর পিলখানায় বীর সেনানীদের পৈশাচিকভাবে হত্যা করতে।এভাবেই দেখলাম ষড়যন্ত্র আর ক্ষমতার দ্বন্দে হারিয়ে যেতে হাজার হাজার মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী।
আজকে চারিদিকে দৃশ্যমান অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু নীতি নৈতিকতা চরমতম অবনতি ঘটছে। সবারই মাঝে কেবলই লোভ আর লোভ। শুধু চাই আরো চাই।নিজের ছাড়া অন্য কাহারো কথা ভাবতে সময় নেই কারো।চারিদিকে শুধু অবিশ্বাস।কারো প্রতি কারো শ্রদ্ধা ভক্তি নাই।একটু সুখের আশায় পাড়ি দিচ্ছে মৃত্যু উপতক্যায় এ দেশেরই সন্তান।দেশে বিচারহীনতায় আছে গুম খুন ধষ'ণ, প্রকাশ্যেই চলছে নৃশংসতার উন্মুত্ত নারকীয় উল্লাস,অর্থ লুটের মহা-উতসব।আছে বাহারি ব্যবস্থা ক্রসফায়ার।সবকিছুই স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী।স্বাধীনতার স্বপ্ন যেনো ফিকে হচ্ছে দিন দিন।আগে ভাবতাম এতো মানুষ মরেছে তাদের মতো আমি মারা গিয়েও যদি আব্বার ব্যাবসা ধন সম্পদ থেকে যেতো আব্বা আম্মাকে এতো কস্ট করতে হতো না।শুধু মনের ভেতর ছিলো একটা আফসোস মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যুদ্ধ করতে না পারায়।স্বাধীনতায় নিজের কোনো ভুমিকা না রাখার।
বড় হয়ে আজ যখন জানতে পারি বংগবন্ধু ভারতের নেতা নেহেরুর কাছে সম্মানজনক সাহায্য চেয়েছিলেন আমদের সংগ্রামে।অদু'দশী নেতা তিনি জানতেন ভারত সাহায্যে করবেই তাদের নিজের প্রয়োজনে পাকিস্তান ভেংগে দু টুকরো করতে।দেশ স্বাধীনের পর পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে দেশে এসে মিত্র বাহিনীকে অতি দ্রুততম সময়ে ফেরত পাঠালেন। কারো প্ররোচনায় উদ্ভুদ্ধ না হয়ে ইসলামি সম্মেলনে যোগদান করে সদ্য স্বাধীন দেশের স্বাধীনচেতা সাহসী যোগ্য নেতার পরিচয় দিয়েছিলেন।কৃতজ্ঞতাতো তারই থাকার কথা বেশী।অথচ আমরা তার উত্তরসুরি আমাদের নেত্রীত্ব আজ অতি মাত্রা কৃতজ্ঞতার ভারে নতজানু।এতো বেশী ভদ্র ,এতো বেশী অমায়িক কোনো কিছুই দাবী করে আনতে পারে না আর কেহ কিছু চাইলে নাও বলতে পারে না ।
একদিকে সীমান্তে কাটা তারের বেড়া।উজানে অভিন্ন নদীতে বাধ দিয়ে পানি ভারতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া।ওপারে চল্লিশ লক্ষ জাতীয় নিবন্ধনহীন বাংলা ভাষা-ভাষী জড়ো করে পুশ ব্যাক করার হুমকি।সীমানা প্রাচীরের কাছাকাছি হলেই বাংলাদেশীদের গুলি করে চোরাকারবারী বলে চালিয়ে দেওয়া।বিজেপি নেতাদের খুলনা থেকে সিলেট পয্য'ন্ত সীমান্ত এলাকা দাবী।ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ বিরোধী কম'কান্ড ও ভুমি ভারতের দাবী করা সমাবেশ উসাহিত করা।বন্ধুতের দোহাই দিয়ে না চাইতে সব কিছু পাবার পরেও আগরতলা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশের ভুখন্ড পাওয়ার আবদার।বাংলাদেশের জাতীয় অনুষ্ঠানে নিজেদের নিল'জ্জ্য অংশীদার হওয়ার বাসনা।রোহিঙ্গাদের নিয়ে বামা'র সংগে বাংলাদেশের যখন টানাপোড়ন সম্পর্ক তখন বামা'কে সাবমেরিন দিয়ে সাহায্য করা।দেশের ভেতর ভারতভুক্তির জন্য প্রাথ'না সহ কিছু অতিউতসাহী জনদের সাম্প্রদায়ীক সম্প্রিতি নষ্ট করার অপচেস্টা।আমরা বলছি ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু ।এ কেমন পরীক্ষিত বন্ধু ? কেন আমদের সংশ্লিষ্ট রথী মহারথীদের হিমশীতল নিরবতা? কেনো নেই শক্ত প্রতিবাদের ভাষা ? সবকিছুই রহস্যজনক !
আজ তাই এতো দিনের বয়ে বেড়ানো বড়ো কষ্টটা ঝেড়ে ফেলে ভুলে যেতে চাই সব।কোনো আফসোস রাখতে চাই না মনে, একাত্ররে ছোট্ট থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যুদ্ধে না যাওয়ার।
https://youtu.be/IQPUPWUqv48
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.