আমাদের অজ্ঞতা আমাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত যেমন করে আবার জানা সত্তেও সজ্ঞানে কাজটা করি কখনো বাহবা পাওয়ার আশায়,হয়তো বা কখনো বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর নিকট থেকে আথি'ক সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য।৭১ এ বিতর্কিত কম'কান্ডে জড়িত কথিত এক বিশিষ্ট ভদ্রলোক।এখন অতি ভাবগাম্ভীর্যের অধিকারী বুদ্ধিজীবি, অসাম্প্রদায়ীকের ঝান্ডাধারী আমাদের সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম মুছে ফেলতে হবে আব্দার করছেন।অন্য আরেক একজন এক কাঠি আরো সরস বললেন রাস্ট্র ধম' ইসলাম বাতিল করা হবে।তাদের একজন সম্ভবত গত বছরে শিশুদের পাঠ্যবইয়ে"ও তে ওড়না" উল্লেখ থাকায় সেখানে শুকে শুকে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়েছিলেন।এরা বাংলাদেশে বাস করে বাংলাদেশের সবকিছুতেই সাম্প্রদায়ীকতা খুঁজে পায়।এদের বাহিরের খোলসটা যতটা অসাম্প্রদায়ীক ভেতরটা তার চাইতে বেশী সাম্প্রদায়িক।বিশেষ করে ইসলামের কথা শুনলেই এদের চুলকানিটা বাড়ে।ধমী'য় বিষোদগার কুতসা রটনায় দেখি সিদ্ধহস্ত, ৭১ এর চেতনা নিয়ে দেখি থাকতে খুবই ব্যস্ত।কিন্তু হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতার অন্য স্তম্ভ গনতন্ত্র,সমাজতন্ত্র নিয়ে তাদের নেই কোনো উচ্চবাচ্য।ন্যায়বিচার নিয়েও দেখিনা তেমন সাড়া শব্দ।প্রয়াত সনামধন্য লেখক হুমায়ুন আহমেদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত এভাবে দিয়েছিলেন “আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজে যাঁরা আছেন, তাদের কার্যক্রম খুব একটা পরিষ্কার না।এরা কেন জানি ইসলাম ধর্মকে খুব ছোট করে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অন্য ধর্মের উতসবে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকেন, বক্তৃতা করেন, বাণী দেন- কিন্তু ইসলামী কোনো জলসায় কেউ উপস্থিত হয়েছেন বলে শোনা যায় না। তাদের মতে, ইসলামি জলসায় কেউ উপস্থিত থাকা মানে তার বুদ্ধিবৃত্তি নিম্নমানের। সে একজন প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক লোক।আমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টানদের কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অর্থ মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা, প্রগতির চর্চা করা, সংস্কারমুক্ত হওয়া ইত্যাদি।" (গুগল থেকে প্রাপ্ত).
ইসলাম রাষ্ট্র ধম' হলে যে জগত উদ্ধার হয়ে যাবে তা যেমন নয় তেমনি অন্য কোনো ধমে'র লোক থাকতে পারবে না বা তাদের ধম'কমে' জীবন যাপনে প্রতিবন্ধক হবে এটা বিশেষ গোষ্ঠীর ইসলামের বিরুদ্ধে প্রপাগাণ্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়।বত'মানে ইসলামকে রাষ্ট্র ধম' করা যতোনা ধমী'য় তার হাজার গুন বেশী উদ্দেশ্য রাজনৈতিক অবশ্যই তা পরিবর্তন এবং পরিবধ'ন করে।সোজা কথায় ক্ষমতায় যাওয়া বা দীর্ঘদিন আকড়ে থাকার বাহনা মাত্র।ইসলামী শাসক রাজা বাদশা দিয়ে যদি ইসলাম কায়েম হতো তাহলে একশত বছরের বেশী মুসলিম রাজা বাদশাহ শাসিত ভারতে কোনো হিন্দুই থাকার কথা নয়।অথচ ভারতে আজ একশো কোটির বেশী হিন্দু ধমা'লম্বীর বসবাস।এই শত কোটি হিন্দু ধমা'লম্বীর দেশ ভারতকেও হিন্দুস্থান করলে বা বললে অসুবিধার থাকার কিছুই নাই।কিন্তু কট্টর উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদির তার শাসনের দশ বছর না যেতে প্রায় ত্রিশকোটি মুসলমানকে বিতাড়িত করার যে অমানবিক ব্যবস্থা নিয়েছে সেটাই সমস্যা। আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিবেচিদের সকাল সন্ধ্যার নমস্য দিল্লির এই বব্ব'র কালাকানুনের বিরুদ্ধে ভারতব্যাপী ধম'বন' নিবি'শেষে সকল শান্তি প্রিয় মানুষেরা প্রতিবাদের ঝড় তুলতে পারলেও এই আজব প্রজাতির বুদ্ধি- বিবেক জাগ্রত হয় নাই,এখন অবধি চেতনায় হিল্লোল তোলে নাই।
ইসলাম একটা শান্তির ধম' মানবতার ধম'।তার অনুসারী হচ্ছে মুসলিম তথা মুসলমান।একজন মুসলমানকে আল্লাহ এবং তার প্রেরিত রসুল আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) কে মনে প্রানে ধারন করে কুরআন এবং হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে হবে।যে ব্যাক্তি কুরআন এবং হাদিসের হুকুম আহকাম মেনে চলতে পারে সে-ই একজন প্রকৃত মোমেন মুসলিম।শুধু নামে আর লেবাসে মুসলিম মুসলমান তকমা লাগিয়ে তার অমানবিক কম'কান্ডকে দিয়ে ইসলামকে কলংকিত করা যাবে না। কারণ শুধুমাত্র জন্ম সুত্রে নামধারী লেবাসধারী কোনো মুসলিম তথা মুসলমান কাউকে হত্যা করে হত্যাকারী হতে পারে, কোনো মুসলিম কোনো নারীকে শ্লীলতাহানি করে মানবতাবিরোধী কাজ করে ধষ'ক হতে পারে সেই জন্য ব্যাক্তি দায়ী।যদি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্র দায়ী হবে কিন্তু ইসলাম নয়।কারণ ইসলাম কাউকে এমন অমানবিক হবার শিক্ষা দেয় না।ইসলামে উগ্রতার স্থান নাই আছে নম্রতার আছে মহানুভবতার।ইসলামে বিনা বিচারে হত্যাকে মহাপাপ বলা হয়েছে, বলা হয়েছে সে শুধু একজনকেই হত্যা করলো না সে যেনো গোটা একটা জাতিকে হত্যা করলো।ধষ'ণ দুরের কথা কোনো মহিলার দিকে দ্বিতীয়বার তাকানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।আর তাই ধষ'কের জন্যও রাখা হয়েছে কঠিনতম শাস্তি।
ইসলাম বলে একজন মোমেন হচ্ছে সেই ব্যাক্তি যার জিভ এবং হস্ত থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ।বলা হয়েছে প্রতিবেশীকে অভুক্ত অনাহারে রেখে কেহ পেট ভরে খেয়ে ঘুমালে সে প্রকৃত মোমেন হতে পারে না।সুতরাং একজন মোমেন মুসলিম তথা মুসলমানকে তার প্রতিবেশীর হক আদায়ের জন্য যে বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে একটা রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র প্রধানের তার ধম'বণ' নিবি'শেষে সকল নাগরিকের কল্যাণের জন্য দায়িত্ব কত'ব্য অনেক অনেক বেশি।মানুষকে অনাহারে রেখে,আইন-কানুন ইচ্ছে মতো ব্যবহার করে, মানুষের ধম' কমে' বাধা দিয়ে আধুনিক গনতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধম'নিরপেক্ষতার ঝান্ডা উড়ানো যেতে পারে কিন্তু ইসলাম এর নয়।চারিদিকে তাকালে সেই চিত্রই দেখতে পাই।প্রত্যেকটা মুসলিম রাস্ট্রই ভ্রাতৃঘাতী হানাহানিতে লিপ্ত।ক্ষমতায় থাকার জন্য যেমন বিরোধী নিজ জনগণের উপর চলছে হত্যা,অত্যাচার নিপীড়ন জেল জুলুম তেমনি প্রতিবেশীর সাথে সংঘাত।তাহলে কোথায় ইসলামের শিক্ষা?কোথায় ভাতৃত্ববোধ ?কোথায় মানবতাবোধ?এটা কোনো ইসলাম নয় এরা ইসলামের লেবাসধারী বিশ্বাসঘাতক।এরা ভোগবাদী তাদের অনৈতিক কম'কান্ডকে জায়েজ করতে ধম'কে বম' হিসাবে ব্যবহার করে ইসলামকে বিতর্কিত করছে।এরাই প্রকৃত ইসলামের বড়ো শত্রু।সুতরাং যে রাস্ট্র তার সকল জনগণের জন্য খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান নিশ্চিত করতে পারে না,গুম খুন নারী ধষ'ণ বন্ধ করে জনগণের জানমাল ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, যে রাস্ট্র তার প্রত্যেকটি জনগণের জন্য শিক্ষা এবং সাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারে না,পারে না সাম্যের ভিত্তিতে প্রত্যেকটি জনগণের জন্য ন্যায়বিচার।আমিও তাদের সাথে একমত সেই রাস্ট্র ইসলামের নামে থাকার কোনো প্রয়োজন নাই।
শুধু ইসলামই নয় কোনো ধম'ই কোনো ব্যাক্তির অপরাধে অপরাধী হতে পারে না।ইসলামই তো নয়ই,কোনো ধম'ই অমানবিকতার পাশবিকতার অনুমোদন দেয় নাই।আর তাই ইয়ামেনীদের সরাসরি হত্যাকারী,প্রতিবেশী কাতারিদের অবরোধকারী,দুনিয়ার একমাত্র উন্মুক্ত কারাগার প্যালেস্টাইনে প্যালেস্টাইনীদের নিব্বি'চারে হত্যাকারী,মধ্যপ্রাচ্যের মানবিক বিপয'য়কারী বব্ব'র ইস্রাইলের সহযোগী,সাংবাদিক খাসগী হত্যার নায়ক সৌদি আরবের সালমান যেমন ইসলামের ধারক বাহক নয় তেমনি বাবরি মসজিদ ধংসকারী, গুজরাটের মুসলিম নিধনের নায়ক,গোমাতা রক্ষার নামে মুসলিম নিধনের পরিকল্পনাকারী,সমতার অযুহাত দিয়ে বিশেষ সুবিধা তুলে নিয়ে কাশ্মীরিদের জীবন দুবি'ষহ করার কারিগর,আবার ভিন্নরুপে NRC এবং CAA আইনের মাধ্যমে ধমী'য় অসম বিভাজন করে অসাম্প্রদায়ীক ভারতের বিনাশকারী মোদি হিন্দু ধমে'র ধারক বাহক হতে পারে না।
একটা ব্যাপার সবারই জানা যে প্রথমেই খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের সুবিধার উপর নিভ'র করে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের আবাস গড়ে উঠেছে,ধমে'র ভিত্তিতে নয়।আধুনিক যুগে এসে মানুষ তার সুখ-সাচ্ছন্দ্যের উন্নতির জন্য অধিক অথ' লাভের আশায় পাড়ি জমায় উন্নত ভিন্ন দেশে।ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অনিবন্ধিত ভারতীয়দের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলায় বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী যথাত'ই বলেছিলেন"বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে সাগর পাড়ি দিতে হলেও যাবে কিন্তু ভারতে নয়"।কথার বাস্তবতা আছে।তবে ভারত হিন্দু ধমা'লম্বীদের তীথ'স্থান।সুযোগ সুবিধা পেলে হিন্দু ধমা'লম্বী যে কেহ অধিক আগ্রহে সেখানে যেতে এবং থাকতে চাইতে পারে।ঠিক তেমনই দুনিয়ার যে প্রান্তে মুসলমান থাকুক না মুসলমানদের পবিত্র ভুমি মক্কা মদিনায় সুযোগ সুবিধা পেলে যে কোনো মুসলমান যাবেই।
আজ সারা বিশ্বে ধমী'য়' উন্মাদনা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষীত হতে দেখা যাচ্ছে।অতি ঘনবসতিপুন' বহু ধম',ভাষাভাষী অধ্যুষিত ভারতবষ' তার থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।রাষ্ট্র নায়কদের একটিমাত্র ভুল এ অঞ্চলে মানবিক চরম বিপয'য় ঘটাতে পারে।হিন্দু রাস্ট্র নাকি ইসলামিক রাস্ট্র এটা কোনো সমস্যা নয় কারণ রাস্ট্রের দায়িত্ব তার জনগণের কল্যাণে কাজ করা।প্রত্যেকটি মানুষের জন্য ধম' বণ' নিব্বি'শেষে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসা শিক্ষা ও নিরাপত্তা বিধান করাই রাস্ট্রের দায়িত্ব ও কত'ব্য।দুনিয়ার কোনো ধম'ই মানুষকে দানব হতে বলে না।মানুষরুপী দানবকে মানুষই হতে বলে।আমরা যারা নিজেদেরকে বড় বেশী অসাম্প্রদায়িক বলি আসলে তারাই বেশী সাম্প্রদায়িক আবার যারা নিজেদেরকে বড় বেশী ধামি'ক বলে জাহির করি আসলে তারাই বেশি অধামি'কের কাজ করি।আমরা সত্যিকার ধমী'য় শিক্ষা পাচ্ছি না আর যতটুকু পাচ্ছি তা নিজ জীবনে লালন পালন করি না।তাই দিন শেষে বলতে পারি আমরা কাম ক্রোধ লোভে কেহই মানুষ হতে পারি নাই।প্রকৃত সমস্যা শান্তি প্রিয় মানুষের নয় ধমে'রও নয়।সমস্যা রাজনৈতিক রাস্ট্র নায়কদের দৃষ্টিভংগীর।আমাদের সেই দৃষ্টিভংগীর পরিবত'ন ঘটাতে হবে আগে মানুষ হবার জন্য।সেই আলোকিত মানুষ হতে হ'লে নিতে হ'বে প্রকৃত ধমে'র আশ্রয়। শেষ করতে চাই মোহাম্মদ রাফির একটা গানের প্রথম লাইন দিয়ে "তু হিন্দু বনেগা না মুসলমান বনেগা ইনসানকি আওলাদ হে ইনসান বনেগা"।
https://youtu.be/IQPUPWUqv48
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.