ক্ষমতার চেয়ারটা সব সব'নাসের মুল। এখানে বসলে অতিত বত’মান সব শাষকের সুর এক হয়ে যায়। প্রধান উপদেষ্টা ড: মুহাম্মদ ইউনুস বিপ্লব পরবর্তী দলকানা পতিত আওয়ামীলীগ সমথ'ক ছাড়া সকল মানুষের কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দেশের চরমতম সংকটে রাষ্ট্র সংস্কারের কান্ডারীর দায়িত্ব কাধে নিয়েছিলেন। মানুষের মাঝে আশা তৈরী হয়েছিল এবং এখনো মানুষ সেই আশা নিয়ে অপেক্ষায় আছে।কিন্তু কোথায় যেন সুরের মাঝে বেসুরের আওয়াজ আসছে।আমরা দেখেছি এনসিপি শাহবাগ যমুনা অবরোধ করেছে কিছু হয় নাই, নিবা'চনমুখী দলগুলি ডিসেম্বরের ভেতর নিবা'চন চাওয়ায় , এবং প্রজাতন্ত্রের কম'কতা'-কম'চারী সহ বিভিন্ন সংগঠনের বিভিন্ন ইস্যুতে রাস্তা দখল-অবরোধ দেখে বিরাগভাজন হয়ে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুস বোধহয় পদত্যাগ করার চিন্তা করেছিলেন ।জাপান সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় "শুধু একটি মাত্র দল ডিসেম্বরে নিবা'চন চায় বলে তিনি বিদেশের মাটিতে সেই দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সাথে সাথে নিজের সব'জন গ্রহণ যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন।পতিত আওয়ামীদের সাথে বিরোধ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ইনটেরিম সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে সেনা প্রধানের সাথে বিরোধ, বৃহত্তর দল বিএনপির সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরী হতে চলেছিল প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুসের লন্ডন সফরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহামান এর সাথে বৈঠকে তা প্রশমিত হয়েছে।শান্তি প্রিয় মানুষের মাঝে সেই অস্বস্থি আর এখন নাই। তবে অতি আশাবাদী রাজনৈতিক দু’ একটি দলের পরশ্রীকাতর হতে দেখা যাচ্ছে।প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহামান এর সৌহাদ’পূন’বৈঠক তারা মেনে নিতে পারছেন না।তারা ইনটেরিম সরকারে নিরপেক্ষতা নিয়েও এখন প্রশ্ন তুলছেন।
রাজনৈতিক কম'কান্ড রাজনীতিকদেরই কাজ।সম্ভবত প্রধান উপদেষ্টা ড: মুহাম্মদ ইউনুস সহযোগী উপদেষ্টা নিয়োগে যোগ্য লোক বেছে নিতে পারেন নাই।তারা দীর্ঘ এগার মাসে সংস্কার, বিচার,নিবা'চন বিষয়ে দৃশ্যমান কিছুই দেখাতে পারেন নাই।পতিত সরকারের রেখে যাওয়া দলদাস সুবিধাভোগীদের বহাল,কোথাও কোথাও পদায়ন করে তা এখন প্রায় একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।আহত-নিহতদের চুড়ান্ত লিষ্ট, আহতদের চিকিৎসা ,নিহত পরিবারের পুন'বাসন বিষয় নিস্পত্তি করা জরুরী ছিল কিন্তু হয় নাই।চিকিৎসার ঘাটতিতে অসুন্তুষ্ট আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে, হাসপাতালকে আবাসস্থল বানিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করছে, রাস্তায় অবরোধ করে জনজীবনে দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে।অন্যদিকে একটা দলকে বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।তাদের দল গোছানোর সময় দিতেই নিবা'চনকে বিলম্বিত করার কথা উঠেছে।
সুদীঘ পনের বছর বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কমীরা নিরপেক্ষ সুষ্ঠ নিবা’চনের দাবীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, গুম-খুন নিযাতনে ঘর ছাড়া স্বজন ছাড়া হয়ে অনাহারে অধা’হারে মানবেতর জীবন কাটিয়েছে।অবশেষে দল-মত নিব্বি’শেষে ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে ইনটেরিম সরকার গঠিত হওয়ার পর মানুষের মনে আশা জেগেছিল রাষ্ট্র সংস্কার হবে, গুম-খুনের বিচার হবে,একটা নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নিবাচন হবে।এগার মাস অতিবাহিত হলেও মানুষের আশা-আকাংখা পূরনের দৃশ্যমান কিছুই পরিলক্ষিত হয় নাই।জুলাই বিপ্লবে দল-মত ধম'-বণ' নিব্বি'শেষে জাতির মাঝে যে ঐক্য তৈরী হয়েছিল আজ তা ক্ষমতা দখলের লোভে শেষ হতে বসেছে।বারবার প্রতারিত হওয়া মানুষেরা নবীন ছাত্র সমন্বয়কদের মাঝে আশার আলো দেখতে পেয়েছিল।একটা পরিবত’ন হবে সেই আশায় বুক বেধেছিল।আজ কেন জানি সেই তরুণদের পথভ্রষ্ট বলে মনে হয়।দিন যতই পার হচ্ছে আশার আলো ততই যেন স্থিমিত হতে চলেছে।মারামারি দলাদলি শেষে ছাত্র সমন্বয়করা এনসিপি নামে রাজনৈ্তিক দল গঠন করেছে।অবশেষে নিবন্ধিত হতে নিবা’চন কমিশনে আবেদন করেছে।ক্ষমতার ছায়াতলে থেকে থানা থেকে অপরাধী ছাড়িয়ে আনা,নিয়োগ-বদলী,কাজ পাইয়ে দেয়া সহ নানা তদবির বানিজ্যের মত অনৈতিক কম’কান্ডে জড়িয়ে পড়া,সভায় ছাত্র সম্বয়কদের প্রতিনীধির উপস্থিত কম’কতা’দের তৈরী হয়ে সভায় আসার মত অশোভনীয় আচরণ,ছাত্র উপদেষ্টার সচিবগনের শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সহ নানা অপকমে'র কথা এখন চারিদিকে।এনসিপির নেতাদের কাছে দলের নেত্রীরাও যেন আজ আর নিরাপদ হতে পারছেন না।
জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আঠার কোটী মানুষের বুকের উপর চেপে বসা জগদ্দল পাথর ফ্যাসিবাদ আওয়ামী শাসককে বিতারিত করতে পারলেও তার প্রেতাত্মাকে বোধ হয় তাড়ানো সম্ভব হয় নাই।সেই প্রেতাত্মা যেন জুলাই বিপ্লবের সেনানী কিছু সমন্বয়কদের কাধে ভর করে বসেছে।তাদের হুমকী ধামকী এখন পলাতক ফ্যসিবাদীদের কথা স্মরণ করতে বাধ্য করছে।ঢাকা দক্ষিন সিটি কপো’রেশন নিবা’চনী মামলায় ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে আদালত থেকে নিবা’চিত ঘোষনার করলে তাকে মেয়র হিসাবে শফথ করানো থেকে বিরত রাখার জন্য ফ্যাসিবাদী কায়দায় কাউকে দিয়ে আপিল করানো হয়েছে,নিবাচ’ন কমিশনের উপর দায় চাপিয়ে সময় ক্ষেপন করা হয়েছে।অন্যদিকে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন তার সমথ’কদের নিয়ে মেয়র হিসাবে শফত ও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবার দাবিতে আন্দোলন করেছে, রাস্তা অবরোধ নগর ভবন ঘেরাও করে জন-জীবনের দুভো'গ ঘটিয়েছে।এব্যাপারে ইনটেরিম সরকারের উপদেষ্টাগণের সমস্যা সমাধান করে জনদূভো'গ কমানোর উদ্দ্যগ নিতে দেখা যায় নাই।সবশেষে আসিফ মাহমুদের জনভোগান্তী সহ্য করা হবে না বলে হুশিয়ারী দেয়ার পর নগর ভবনে আন্দোলনকারীদের উপর বহিরাগতদের হামলা কাম্য ছিল না।যাকে শান্তিপ্রিয় মানুষ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ফ্যাসিবাদী আচরণ বলেই মনে করতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রকাশ থাকে যে আদালতের রায়ে চট্টগাম সিটি কপো'রেশনের মেয়র হিসাবে বিএনপি নেতা ডাঃ শাহাদত হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে কিন্তু ইশরাকের ক্ষেত্রে বৈষম্য কেন? কেন এই জনভোগান্তী?বাজারে কথা উঠেছে উত্তর সিটি কপো'রেশনে যেমন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার আস্তাভাজন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছেন তেমনি দক্ষিণ সিটি কপো’রেশনেও তার আস্তাভাজন প্রশাসককে বহাল রাখতেই আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেছেন।আসিফ মাহমুদের অনেক আগেই পদত্যাগ করা উচিৎ ছিল । উপদেষ্টা নাহিদ পদত্যাগ করলেও কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ করেন নাই।বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন আর ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করে ক্ষমতার চেয়ারে বসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মনে রাখা উচিৎ ছিল তিনি পাচ বছর মেয়াদী নিবা’চনে নিবা’চিত সরকারে কোন মন্ত্রী এমপি নন।তিনি আপদকালীন ইনটেরিম সরকারের একজন উপদেষ্টা।তার উচিৎ ছিল আলাপ-আলোচনা করা অথবা আদালতের রায় এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।বৈষম্যমূলক ফ্যসিবাদীদের মত আচরণ তার করা ঠিক হয় নাই।এতো রক্ত এতো লাশের উপর দাড়িয়ে ভুত তাড়ানোর সরিষায় ভুতের অস্তিত্ব দেখে মানুষের তা মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে বৈকি।দীঘ’৪৩ দিন পর ঢাকা দক্ষিন সিটি কপো’রেশনের নগর ভবনে প্রশাসক মোঃশাহজাহান মিয়া গিয়েছেন সকল কম'কতা'-কম'চারীগণ সাদরে তাকে গ্রহণ করেছেন।সকল কম'কতা' নাগিরক সেবা দিতে একযোগে কাজ করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।মনে হচ্ছে ইশরাক আদালতের রায় বাস্তবায়নে জনদূভো’গের কথা চিন্তা করে আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন।আশা করি নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত নগরবাসীর এবার ভোগান্তীর দিন শেষ হবে।সাধারণ মানুষ রাজস্ব দেবে আবার নেতাদের ব্যক্তিগত স্বাথ' কিংবা ইগোর কারণে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবে তা হতে পারে না।দিন বদলেছে মানুষ আগের চাইতে অনেক অনেক বেশি সচেতন।আশা করি নেতারা তাদের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে তা অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন এবং জনদুভো'গের কারণ হওয়া থেকে আগামীতে বিরত থাকবেন।