অনেক বছর আগে কোনো এক আড্ডায় একটা শোনা গল্প দিয়ে শুরু করি । সাজিয়ে গুছিয়ে বলতে বোধহয় পারা যাবে না তবুও চেষ্টা করবো। মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর শশুর বাড়ি থেকে এই প্রথম এসেছে। মা- মেয়ে রান্না-ঘরে রান্না কাটাকুটির সাথে সাথে গল্প করছে।মা মেয়ের মধ্যে লাজ লজ্জা থাকলেও বিয়ের পর একটু বোধহয় আড়ষ্টতা কমে, ঘনিষ্টতা বাড়ে।মেয়ে জামাইয়ের বাড়ি থেকে ফিরেছে তাই মা'র জানা দরকার মেয়ে এবং জামাই এর মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কিনা এবং তারা খুশী কিনা। তাই মা এটা সেটা বলতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মেয়েকে বলছে।
মা
: হ্যাঁরে জামাই
তোকে
আদর
টাদর
করে
তো
ঠিক
মতো?
মেয়ে
: একটু
লাজুক
হয়ে
খুশিতে
গদ
গদ
হয়ে
বলছে
খুব
আদর
করে।
জানো
মা
ও
না
আমাকে
কতো
কিছু
দেবে
বলেছে।
মা
: মেয়ের মুখের
দিকে
তাকিয়ে
জানতে
চায়
হ্যাঁ
রে
বুঝলাম
তোকে
অনেক
কিছু
দেবে।
তা
বলতো
জামাই
কি
ওঠার
আগে
বলেছে
নাকি
নামার
সময়
বলেছে?
মেয়ে
: একটু
লজ্জা
পায়।
মাথা
নিচু
করে
বলে
ওঠার
আগে।
মা
: দেখো মেয়ে
এসব
মনে
করে
খুশী
হ'বার কিছু ই
নাই।
তোমার
বাপও
এমনটা
হাজার
বার
বলেছে
আর
নামতেই
সব
ভুলে
গেছে।
আপাতত এখানেই আমি শেষ করি আর মা-মেয়ে
তাদের গল্প তাদের মতো চালিয়ে যাক। আমরা না হয় ঘুরে আসি রাজনীতির রংগ মঞ্চ থেকে। তবে
তার
আগে
একটু
জানা
দরকার
আমাদের
দেশের
নদী
গুলির
উজানে
ভারত
কি
করছে।
গংগার
ফারক্কা বাধ
নিয়ে
এখন
কোনো
সাড়া
শব্দ
নাই।
চুক্তি
মোতাবেক পানি
আসছে
কি
আসছে
না
তা
নিয়ে
কোনো
কথা
শুনি
না
অনেক
দিন।তাতে মনে হয় আমরা ভালো আছি।তবে ভরা
বষা'য় উজানে বাড়তি পানির
চাপ
কমাতে
প্রতিবেশী অকৃতিম
বন্ধু
যখন
ফারক্কা বাধের
গেট
খুলে
আমাদের
শহর
গ্রাম
শস্য-ক্ষেত ঘরবাড়ি
ভাসিয়ে
দেয়
তখন বেশ মনে
পরে।টিপাইমুখী বাধ
বন্ধ
করা
নিয়ে
অনেক
ঢাক
ঢোল
বাজলো।গুঞ্জন আছে
এই
বাধ
বিরোধী
আন্দোলনের কারনে
সিলেটের বিএনপি
নেতা
ইলিয়াস
আলী
হারিয়ে
গেছেন।সেটা ও
অনেক
অনেক
দিন
আগের
কথা।
কিন্তু
নেতা
আজও
ফেরে
নাই,
টিপাইমুখী বাধের
নামও
এখন
আর
শুনি
না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী
লীগের
ভারতের
বত'মান এবং অতীতের
সকল
সরকারের সাথে
ইতিহাসের সর্বোচ্চ মধুর
সম্পর্কের মাঝেও
দীর্ঘ
পনেরো
বছরে
তিস্তা
চুক্তি
সম্পন্ন করা
যায়
নাই।
কিন্তু
মূলা
ঝুলিয়ে
ভারত
তার
চাহিদার ষোল
আনা
আদায়
করে
নিয়েছে। আমরা
অকৃতজ্ঞ নই
তাই
স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতার প্রতিদানে চাহিবামাত্র সব
কিছু
তুলে
দিয়েছি অকাতরে উজাড় করে ।সীমান্তে বাংলাদেশীদের দিয়ে
ভারতের
সীমান্ত রক্ষীদের টাগে'ট প্রাকটিসে কেহ
আহত
নিহত
হ'লে ই গরু
চোরাকারবারি তকমা
লাগিয়ে
দেওয়া
হয়
আর
আমাদের
বিজিবি
ভায়েরা
অধিকাংশ ক্ষেত্রে ই
বিনা
প্রতিবাদে লাশ
নিতে
অপেক্ষায় থাকে ।সব ঠিক
হবে
এই
আশার
বানীতে
আমরা
চোখ
বন্ধ
করে
রাখি।কিন্তু সেই টাগে’ট কিলিং বন্ধ হয়
নাই।
মনে করা এখন বড় প্রয়োজন ভারত শুধু কেবলই আমাদের স্বাধীনতার জন্য ই আমাদের সাহায্য করে নাই। সে তার পুবা'ঞ্চলকে শত্রুর আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখতেই পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করেছে তা আজ দিবালকের মতো পরিস্কার। সেই একই দাবার খেলার বোড’আজ বেলুচস্থান।সীমান্তে টাগে'ট প্রাকটিসে বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশীদের যখন তখন হত্যা করলেও চরম শত্রু পাকিস্তান সীমান্তে এমন ঘটনা ঘটে না। আজ ভুলে গেলে চলবে না স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য নেবার সময় আমাদের নেতা বংগবন্ধু ভারতীয় নেতাদের বলেছিলেন সাহায্য চাই তবে তা হ'তে হবে সম্মানজনকভাবে।তাই পাকিস্তান থেকে মুক্ত হ'য়ে দেশে এসে অতিদ্রুত ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন।যোগ দিয়েছিলেন ইসলামী সম্মেলনে। সেই নেতার চাইতে আজ আমাদের কারো কারো এতো এতো বেশী কৃতজ্ঞতা কি খুব বেশি বেমানান নয়?
ভারত বাংলাদেশের সাথে তার অভিন্ন নদীতে উজানে বাধ দিয়ে সংযোগ খাল কেটে সেই পানি অন্যান্য রাজ্যে অপসারণের মহা-পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সে-ই অনেক বছর আগে এবং তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার কাজও চলছে জোরে শোরে।আমাদের পানির স্তর দ্রুত নিচে নামছে আর উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিনত হচ্ছে। খরায় জ্বলছে আর ভরা বষা'য় ডুবছে।সাথে জলবায়ু পরিবর্তনে উষ্ণতা বাড়ছে। আমাদের নীতিনির্ধারকেরা ঘুমিয়ে আছেন। আমরা আছি দৃষ্টিনন্দন বিনিয়োগ অনুযায়ী কম’সংস্থানহীন অবকাঠামো নিমা’নের মেঘা প্রকল্প নিয়ে।পরনিভ’শীলতা কমাতে বিকল্প ভাবনা ভাবতে হবে।সরকারী খাস জমিতে বড় বড় জলাধার নিমা'ন করে বষা'র সময় পানি ধরে রাখা যায় কিনা দেখতে পারি।নদীগুলি ড্রেজিং করে দুপার উচু করে বাধ দিয়ে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি করে পানির ধারন ক্ষমতা বাড়ানো যায় কিনা ভাবতে পারি ।মধ্য এশিয়ার আমুদরিয়া এবং শিরদরিয়া নদীর ভাটিতে অবস্থান কাজাকিস্থান ,তুকি'মিনস্থান ও উজবেকস্থান হ্রদ ও বিভিন্ন জলাধারে পানি সংরক্ষন করে শুষ্ক মৌসুমে এভাবে পানির চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে থাকে বলে জানা যায়।জানা দরকার শুধু তিস্তা ই নদী না ।তিস্তা ছাড়া ও আর ও ৫৩টি ভারতের সাথে বাংলাদেশের অভিন্ন নদী আছে।গঙ্গার পর কুশিয়ারা নিয়ে একটা চুক্তি হয়েছে কিন্তু খাদ্যের যোগান উত্তরাঞ্চল মরুকরণ রোধে অভিন্ন বাকী নদী গুলির পানির হিস্যা আদায়ে ভারতের কাছে জোরালো দেন দরবার করবার পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে
জানা
যায়
পশ্চিমবঙ্গের মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিস্তা
নদীর
পানি
ব্যবহারের জন্য
পশ্চিমবঙ্গে আরো
দুটি
খাল
খনন
করতে
যাচ্ছে
।তিস্তা
ও
জলঢাকা
থেকে
পানি
তোলার
জন্য
একটি
৩২
কিলোমিটার দীর্ঘ
খাল
কোচবিহার জেলার
চ্যাংড়াবান্ধা পর্যন্ত খনন
করা
হবে
এবং
তিস্তার বাম
তীরে
আরেকটি
১৫
কিলোমিটার দীর্ঘ
খাল
তৈরি
করা
হবে।
এতে
প্রায়
তাদের
এক
লাখ
কৃষক
উপকৃত
হবে।
শুধু
খাল
খনন
নয়
পশ্চিম
বংগ
রংগিত
নদীতে
তিস্তা
লো
ড্যাম,
বালাসন
ও
রংভা
নদীতে
বালাসন
জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিতে
প্রতিবেদন তৈরির
প্রস্তাব ও
অনুমোদন দিয়েছে।
ভারতীয়রা জাতি ধম’-বণ’ গোত্র নিবি’শেষে শতভাগ দেশ-প্রেমিক তাতে কোনো সন্দেহ নাই।অনেক আগ থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছিলেন তিস্তায় পয্যা'প্ত পানি নাই কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশকে পানি দেওয়া যাবে না।তাই মোদির বাংলাদেশ সফরে মমতার বিরোধিতায় ঢাকায় শেষ মুহুত্তে’ও তিস্তা চুক্তি হয় নাই। আজ ভারতের হাতে তিস্তা নিয়ে এতো সব প্রকল্প যখন চলমান তখন বাংলাদেশের জাতীয় নিবা'চনের মাত্র কয়েক মাস আগে এমন কি ঘটনা ঘটলো ভারতের সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশের সাথে তিস্তা চুক্তি দ্রুত সমাধান করার কেন্দ্রীয় সরকারকে তাগিদ দিল।ভরা বষা’য় পানি দেবে ডোবাতে তাতে ভুল নাই ।প্রশ্ন জাগে ভারত তার নিজের স্বা্থ’ জলাঞ্জলী দিয়ে সত্যি কি শুষ্ক মওশুমে পানি দেবে কখনো বাংলাদেশকে? নাকি সেই অতি পূরাতন “ হবে ” এর মুলা ঝুলিয়ে নতুন কোনো চুক্তির নামে জাতীর পায়ে কোনো বেড়ি পরাতে চাইছে ? এমন কি হতে পারে চীনের সাথে বাংলাদেশের তিস্তা মহা-পরিকল্পনার চুক্তি বানচাল করবার নতুন কোনো ফন্দী আটছে ?
আমাদের নেতাদের কেহ কেহ খুশীতে গদগদ হয়ে গলা চড়িয়ে বলছেন যে ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি হবেই ? নেতারা ভুলে যান এটা তাদের অতি গবে' উচ্চারিত ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন ঘটনা ঘটা আর তা প্রচার হ'তে সময়ের ব্যবধান মাত্র ক্ষনিকের ।দ্রব্য মূল্যের উদ্ধ্য’ গতিতে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা, গুম-খুন মামলা-হামলায়, রাজনৈতিক বৈরীতায় শংকিত জনপদ ।সংঘাত-হানাহানি বন্ধে সদ্য সমাপ্ত উপ-নিবা’চনে ভোটারের উপস্থিতি, ভোটের সংখ্যা দেখে এবং রাজনৈতিক সমাবেশে সাধারণ মানুষের সরব উপস্থিতি নিয়ে ভাবতে হবে,পড়তে হবে ঐসকল সাধারণ মানুষের চোখ ও মনের ভাষা। জনগণকে খাদ্য,বস্ত্র, শিক্ষা,চিকিৎসা এবং নিরাপদ বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিন।স্বাধীনতার অধ’শত বছরে নেতাদের ভাষণ,শাসন আর শোষনের তামাশা দেশবাসীর কম দেখা হয় নাই। তাই বলি মেয়ের বাপের তার মায়ের সাথে ওঠার আগের প্রতিশ্রুতির মতো জাতির সাথে অতীতের ভোটের আগের একই লজ্জাজনক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার তামাশা করা থেকে এবার বিরত থাকুন।
https://www.youtube.com/channel/UCO9Em15PgixJY8mgVh78rjA
No comments:
Post a Comment