Wednesday, October 22, 2025

প্রসঙ্গ : জুলাই সনদ

     অবশেষে বহুল আলোচিত বহু কাংখিত “জুলাই জাতীয় সনদ “গত ১৭/১০/২০২৫ ইং তারিখ শুক্রবার স্বাক্ষরিত হল।রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দদের সাথে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সুদীঘ’ কয়েক মাস বৈঠকের পর বৈঠক হয়েছে।তাদের সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল জুলাই জাতীয় সনদ।গত ১৬/১০/২০২৫ ইং বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দদের সাথে জরুরী বৈঠকে বসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ।সেখানে তিনি আশা করে বলেছিলেন আমরা উৎসবমূখরভাবে সেখানে যাব এই দলিলে স্বাক্ষর করবো ,উৎসব করবো ।সারা জাতি তাতে শরিক হবে।কিন্তু তা হতে পারে নাই।জুলাই যোদ্ধাদের ব্যানারে অনুষ্ঠান বানচাল করার চেষ্টা হয়েছে।পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি ভাংচুর এবং আগুন দিলে পুলিশ লাঠিচাজ’ করতে, কাদানে গ্যাস সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে বাধ্য হয়েছে।

     সংসদ ভবনের দক্ষিন প্লাজায় বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ,জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সদস্য ,উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সহ  দেশের বড় বড় দলের নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে দেশের ২৪টি রাজনৈ্তিক দলের নেতৃবৃন্দ জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করার পর ইনটেরিম সরকারের প্রধান ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস তাতে স্বাক্ষর করেন।কয়েকটি বাম দল ও জুলাই বিপ্লবের নেতৃত্বদানকারীদের দল এনসিপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন না।উল্লেখ্য জুলাই ঘোষনার সময়ও এনসিপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন না।জাতির কাছে তা কাংখিত নয়। নিবা’চন কমিশনে নিবন্ধিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দগ্ণ সম্ভবতঃ উপক্ষীত হয়েছে,তাই তাদের কাউকে দেখা যায় নাই।আজ অবধি বাংলাদেশের কোন জাতীয় দিবস সত্যিকারভাবে দলমত নিব্বি’শেষে একই চিন্তা-চেতনা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে উৎযাপন করতে পেরেছি বলে স্মরণে নাই।জাতির জন্য বড়ই পরিতাপের বিষয় ।আগামীতে আমাদের রাজনীতিকগণ তা ভেবে দেখবেন আশা করি।

      সম্ভবত ফেব্রুয়ারী’২৬ এ  নিবা’চন ,অক্টোবর’১৭ এ “জুলাই জাতীয় সনদ” স্বাক্ষরকে ঘিরে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী নিয়ে নানা রকম প্রচারণা,আইনশৃংখলা অবনতির নানা রকম অনুষংগ আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে।রাজনীতিবিদগ্ণ যে জনগণের জন্য রাজনীতি করছেন তাদের চাহিদা খুব একটা বেশী না।তাদের প্রয়োজন রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতায় সাম্য ও ন্যায় বিচার,খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান,শিক্ষা চিকিৎসা ও নিরাপত্তা।রাষ্ট্র পরিচালনা করেন রাজনীতিকগণ তাই সবার আগে প্রয়োজন আপনাদেরই সংষ্কার আপনাদের নিজেদেরই পরিবত’ন। সবকিছুতে সবাই একমত হবেন তা সম্ভব নয়,রাজনীতিকদের বেলায় তা আরো খুব বেশি অসম্ভব।কিন্তু রাজনীতিকদের দেশ-প্রেমিক হতেই হবে এবং রাষ্ট্র-জনগনের ক্ষতি হয় এমন কম’কান্ড করা থেকে বিরত থাকতে হবে।দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী নিবা’চিত নীতি-নিধা’রক  রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকে।তাদেরই আদেশ নিদে’শ পালন করতে হয়।সেক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকারীর হাতে থাকে দুটি বিষয় হয় তাকে আদেশ পালন করা অথবা চাকুরি থেকে অব্যহতি নেয়া।

      ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় দেশকে অস্থিতিশীল রাজনীতিকরাই করেছেন বারবার  এবং সামাল দিতে না পারলে প্রতিরক্ষা বাহিনীকেই নামতে হয় রাস্তায়।নিবা’চিত নীতি-নিধা’রকদেরই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আদেশ নিদে’শ পালন করতে গিয়ে দায়িত্বরত তাদেরই উচ্চাবিলাসী  কেউ কেউ পদভ্রষ্ট হয়।যে কোনো পদভ্রষ্ট অপরাধীর আইনী বিচার হতেই হবে।কিন্তু গুটি কয়েক সদস্যের কারণে দেশের শেষ আস্থার স্থান পুরা প্রতিরক্ষা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে থাকলে তাদের  মনোবল ভাংতে পারে চেন অব কমান্ড নষ্ট হতে পারে।যা রাষ্ট্রের সাবো’ভৌম ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকী হতে পারে।বত’মান বিশ্বব্যবস্থায় রাজনীতিকদের অনৈক্য, যে কারোরই হঠকারী নেতিবাচক পদক্ষেপে কোনো সংকট দেখা দিলে তা সামাল দেয়ার সক্ষমতা এখন রাষ্ট্রের আছে বলে মনে হয় না।তাই রাজনীতিকগণ নিজেদের মাঝে ইগো পরিহার করুন জুলাই সনদের রুপরেখা বাস্তবায়ন করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে  দেশ এবং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পুরণ করতে এবার অন্তত ভাবুন।

 https://www.youtube.com/channel/UCO9Em15PgixJY8mgVh78rj

No comments: