একটা সমাবেশ এবং কিছু দাবি,স্বরাস্ট্র মন্ত্রী আসাদুজজামন খান কামাল সাহেব বলেছেন "হুমকির কোনো কারণ নাই তারা এখানে আশ্রিত"(সুত্র : বিডিনিউজ২৪.কম)।কিন্তু এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে কিছু অতি উতসাহী মানুষজনের রোহিঙ্গাদের প্রতি এতো বিরুপ মনোভাব হঠাৎ আবেগ তাড়িত নাকি কোনো নীল নকশার সুচনা মাত্র।প্রশ্ন জাগতেই পারে রোহিঙ্গারা কি প্রিয়া সাহা,ইসকন কিংবা যারা বাংলাদেশকে ভারত ভুক্তি করতে চায় তাদের চেয়েও ভয়ংকর? নাকি এই সকল দেশদ্রোহীদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ, সীমান্তে মানুষ হত্যার ক্ষোভ, কাশ্মীরে অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ,সারা ভারতজুড়ে গোমাতার নামে মুসলিম নিধনের ক্ষোভ, আসামের প্রায় বিশ লক্ষ বাংলা ভাষা ভাষীকে নিবন্ধন থেকে বাদ এবং তাদের বাংলাদেশে পাঠানোর বিজেপি র কিছু নেতার আস্ফালন এসব কিছু থেকে মানুষের নজর অন্যদিকে সরানোর ব্যবস্থা নয় তো ?
আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কম'কতা'গণ প্রতিটি রোহিঙ্গার ঘরে ঘরে না গিয়ে বিশাল জনগোস্টীকে একছাতার নিচে আনার মতো একজন সংগঠক পেয়ে তাকে কাজে লাগানোর চিন্তা করতে পারেন।তা না করে প্রতিপক্ষ হিসাবে দাড় করালে সমস্যার সমাধান না হয়ে বরং জটিল থেকে জটিলতর হতে পারে। আমাদের আমলে নিতে হবে এই বিশাল জনগোষ্ঠী শখ করে নিজ ভিটে মাটি ছেড়ে এক কাপড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসে নাই।তাদের মানসিক অবস্থার কথা ভাবতে হবে।তারা দেখেছে চোখের সামনে তাদের আপনজনদের মায়ানমার সেনাবাহিনী এবং উগ্র জংগীরা কি নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে,বাড়ি ঘড়ে আগুন লাগিয়ে তাতে আপনজনদের পুড়িয়ে মেরেছে,আপনজনদের ধষ'ণ করেছে, নিজেরাও হয়েছে গনধষ'ণের শিকার।অপরাধ তারা মায়ানমারের নাগরিক নয়।কারণ তাদের নাগরিক হিসাবে মানতে রাজি নয় মায়ানমার সরকার।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের চাপে পূবে' কয়েকবার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটার দীর্ঘ দিন পর প্রায় এগারো লক্ষ শরনাথী'র ভেতর মাত্র গুটি কয়েক মানুষকে অতি আনুষ্ঠানিক ভাবে নিতে আসার একটা চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছিল মায়ানমার, গোটা দুনিয়াকে দেখানোর জন্য তাদের সদিচ্ছার কথা।যেখানে আশ্রয়হীন মানুষদের বাড়িঘর ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো প্রতিশ্রতি নেই,নাগরিকত্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নেই,হয় নি কোনো অবকাঠামো তৈরি,সেখানে কোন আশায় কোন ভরসায় কে যেতে চাইবে আবার মায়ানমারের হায়েনার খোয়ারে।রোহিঙ্গাদের দাবি একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।তাই "আমরাই পারি"ইগো ত্যাগ করে রোহিঙ্গা সমস্যা পুরাপুরি আন্ত'জাতীকরন করতে সকল সামথ্য' প্রয়োগ করতে হবে এবং জাতিসংঘের মাধ্যমেই অতি দ্রুত এদের প্রত্যাবর্তন সুনিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এই জনগোষ্ঠীকে ট্রেনিং এবং অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে আমরাও যে বাধ্য হতে পারি সে কথাও জানাতে হবে। এখন সবাই শক্তের ভক্ত নরমের যম। কথায় বলে কখনো কখনো কুকুরকে মুগুর দেখাতে হয় সেটা সবল দূব'ল দুটোই হতে পারে, কুকুর সেটা বোঝে না কিন্তু পালিয়ে যায় অথবা নিরাপদ দূরত্ব বেছে নেয়। শক্তি যা-ই থাকুক, জানাতে তাকে প্রদর্শন করতে হবে। আমরা যদি পাকিস্তান-ভারত সীমান্তের দিকে তাকাই দেখা যাবে শক্তি সামথে' পাথ'ক্য থাকা সত্ত্বেও একে অপরের উপর আঘাত হানতে চিন্তা করে।আমরা মুক্তি যুদ্ধে অবদানের জন্য চাহিবামাত্র সবকিছু দেওয়ার পরেও আমাদের সীমান্তে বাংলাদেশীদের গুলি করতে আমাদের অতি বন্ধুর বাধে না। কারণ পাল্টা জবাব পাওয়ার আশংকা তাদের নেই ।শরনার্থী আসার প্রথমে অনেকেই মায়ানমারকে চাপে রাখতে একটা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে তারা চাপে থাকে।সেটা তারা পায় নাই তাই তারা অত্যাচার চালিয়ে গেছে আর রোহিঙ্গারা জীবন বাচাতে বাধভাংগা জোয়ারের মত বাংলাদেশে এসে ঢুকেছে।
রোহিঙ্গা নিয়ে ষড়যন্ত্র হবারই কথা।দেশের রাজনীতির সবকিছুতেই বিএনপি-জামাত কে নিদ্দি'ষ্ট করার মতো আন্তর্জাতিক অংগনে কারো দিকে নিদ্দি'ষ্ট করে আগ থেকে অংগুলি তুলে রাখলে চলবে না।আমদের ভুলে গেলে চলবে না যে দুনিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপুন' দ্বিতীয় বৃহৎতম মুসলিম অধ্যুষিত অতি অগ্রসরমান প্রাকৃতিক সম্পদশালী আমাদের বাংলাদেশ। বত'মান দুনিয়ায় ধমী'য় আগ্রাসীর কারণে আমরা আজ প্রতিবেশী দুই-দেশেরই অভিন্ন শত্রু।আজকের দুনিয়ায় চির বন্ধু যেমন নাই চির শত্রুও নাই।স্বাথে'র ব্যারোমিটারে চলছে সম্পকো'ন্নয়ন।কারো উপরই আমাদের একক অতি নিভ'রশীল হলে চলবে না। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বিস্তৃত এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।রোহিঙ্গাদের খুব বেশী অনুগত করতে কচলা কচলিতে সামাজিক এবং আইন শৃংখলার পরিবেশও নষ্ট হতে পারে।তাই এখনই আশ্রয়দাতা আর আশ্রয় গ্রহণকারীর মাঝে অনাস্থা অবিশ্বাস তৈরির পথ বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় এমন দিন হয়তোবা আসতে পারে আইন শৃংখলা রক্ষা করতে কঠোর হতে গিয়ে আমাদের দেশের মানবতার জন্য অজী'ত সকল সুনাম,মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর' মাদার অফ হিউমিনিটি"র মতো সম্মান ধুলায় মিশে যেতে পারে।
https://youtu.be/IQPUPWUqv48