Tuesday, January 21, 2025

রাষ্টের অখন্ডতার ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ আদিবাসী ইস্যু

জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে চরম বেহাল অবস্থায় ডঃ ইউনুসের রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ অরাজনৈতিক ইনটেরিম সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছিলেনদীঘ’ পনের বছরের রাষ্ট্রে্র প্রতিটি সেক্টরের রাজনৈতিক দলীয়করণকৃত কমকতা-কমচারী বহাল রেখেই প্রায় শুন্য তহবিল নিয়ে অত্যন্ত কঠীনতম রাষ্ট্র পরিচালনার শুরু করেছিলেন  যাত্রাপুলিশ প্রাশাসন শুন্য তাদের কমেফেরানো, ওপার থেকে চাপিয়ে দেয়া বন্যা সামাল দেয়া, আনসারদের বিদ্রোহ সামাল দেয়া, সনাতনী ব্যনারে দেশি-বিদেশী প্রপাগান্ডায় সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা বাধাবার চেষ্টা সামাল দেয়া, প্রতিদিন দাবি আর দাবির কাফেলা সামাল দেয়া, বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানো, আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন,ধ্বংস প্রায় আথিক খাতকে ঢেলে সাজিয়ে ব্যংক খাতকে রক্ষা করা সরকারের সাফল্য বলতেই হবেপাচ মাসের অতি অল্প সময়ে পুরানো কারিকুলাম সংশোধন করে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠীকভাবে বই সরবরাহ খুব একটা সহজ কাজ নয়সেখানে কিছু ভুল থাকতেই পারে তার সংশোধন আবার কারো মনঃপুত হতে নাও পারে কিন্তু আমাদের অসহিস্নু হওয়া,নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়ে একে অপরের উপর হামলে পড়া একেবারে অগ্রহণযোগ্য অপরাধ যা  মেনে নেওয়া যায় না

পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি রাখা না রাখা নিয়ে গত দিন দুপক্ষের হাতাহাতি, মারা-মারিতে আহত হওয়া, বাদ-প্রতিবাদ সচিবালয় ঘেরাও করার চেষ্টা, প্রতিরোধে পুলিশের লাঠিচাজকাদানে গ্যাস জলকামান ব্যবহার করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করারাস্তায় মানুষের ভোগান্তির যেন আর শেষ নাইছাত্র-জনতার ঐ্ক্যের ফসল জুলাই বিপ্লবের বিজয়ের পর আশা ছিল দেশ এবং দেশের মানুষ সব বিভেদ ভুলে হাঙ্গামা হাতাহাতি, মারামারি থেকে দূরে থাকবো ইনটেরিম সরকারকে সাহায্য সহযোগীতা করে রাষ্ট্র সংস্কার করতে দিয়ে আমাদের দেশটাকে নতুন ভাবে গড়তে দেখবোএকেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শিক্ষাঙ্গনে আবার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবেআমাদের ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজ নিজ পড়াশোনায় ফিরে যাবেনাহ প্রতিদিনই একটা না একটা ইস্যুতে জন-জীবন আজ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে

অনেকদিন পর আবার আদিবাসী ইস্যুতে মিছিল পাল্টা মিছিলে রাস্তা সরগরমসবার সমান অধিকারের বাংলাদেশে বিভিন্ন ইস্যুতে দাবি থাকবে প্রতিবাদ থাকবে তাতে দোষের কারণ নাইকিন্তু আজ রাষ্টের অখন্ডতার ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধআদিবাসীইস্যু কেন? বাংলাদেশের পাহাড়ে বসবাস করা কোন জনগোষ্ঠী  জাতীসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী আদিবাসী নয়কারণ পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন ভাষাভাষী ধমালম্বী  জনগোষ্ঠী ভারত এবং বামাথেকে আগত তারা অভিবাসীআদিবাসী/উপজাতী  সবার সমান অধিকারের বাংলাদেশের সবাই বাংলাদেশীদাবি হওয়া উচিত সবার সমান ন্যায্য অধিকার এবং সু-বিচারডঃ ইউনুস ঠিকই বলেছিলেন "আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই, মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার গুলো নিশ্চিত হোকব্যতিক্রমে দাবি থাকবে সরকার তা বিবেচনা করবে

২০০৭ ইং সালের আগ পয্যন্ত পাহাড়ী ভায়েরা নিজেদের উপজাতী পরিচয় দিতে গবকরতেনব্রিটিশ-পাকিস্তান দলিলপত্রে তো বটে  ১৯৯৭ ইং সালে জন-সংহতি সমিতির সাথে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিতেও পাবত্য চট্টগ্রামকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল বলা হয়েছেআজ বাংলাদেশে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তার মূল কারণআদিবাসী-জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র-২০০৭এই ঘোষণা পত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য  ভূমি অধিকার, স্বায়ত্তশাসন সহ অনেক অকল্পনীয় অবাস্তবায়ন যোগ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছেপ্রয়োজনে এই সব অধিকার বাস্তবায়নে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ পাওয়ার অধিকার রাখা হয়েছেযা কিনা একটি অখন্ড স্বাধীন সাবভৌম রাষ্ট্রকে খন্ডিত করার অনুষঙ্গ হয়ে দাড়িয়েছেআদিবাসী-জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র-২০০৭ এর ভোটাভুটিতে বিশ্বের ১৪৫টি দেশ পক্ষে থাকলেও অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং মাকি' যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে অবস্থান নেয়অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশও জাতিসংঘের ঘোষণা পত্রের অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ভোট দানে বিরত থাকে

সশস্ত্র বিচ্ছিনতাবাদী কুকিচীন যখন আলাদা রাষ্ট্র গঠনের ডাক দেয় আমাদের উপজাতি ভায়েরা যখন দাবি তোলে তাদের পাহাড়ে সমতলের মানুষ থাকতে পারবে না সেনাবাহিনী থাকতে পারবেন না তখনি প্রশ্ন জাগে জাতিসংঘের ঘোষণা পত্রের সুবিধা নিতেই কিআদিবাসীনা  হয়েও এতোদিনের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী/উপজাতি ভায়েরা আদিবাসী স্বীকৃতীর দাবী তুলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেনএব্যপারে পাবত্য অঞ্চলে মিশনারী, ইউরোপীয় কিছু দেশ এবং বাংলাদেশেরই তথাকথিত কিছু সুশীলজনের বিরুদ্ধে উচকানির অভিযোগ অনেক পুরনোআমাদের আবেগেরও যেন শেষ নাইআজ আবার দেশের সেই সকল সুশীলদের উচ্চ কন্ঠ শোনা যাচ্ছে২৪জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচারের নিমমতা-বব্বতায় শত শত ছাত্রজনতা আহত নিহত হলেও যাদের অনেকেরই টিকিটি দেখা যায় নাইছাত্র-জনতার দুঃসময় তারা ঘাপটি মেরেছিলেনআজ কাদের ইন্ধনে কার উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নেআদিবাসী  ইস্যুতে  তাদের  এই অপতৎপরতা ?

যারা পাহাড়ী জনগোষ্টীর সাংস্কৃতিক কৃষ্টি কালচার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেআদিবাসীস্বীকৃতি দাবি করছেন একবার ভাবুন ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে আদি ঢাকাবাসীর সাংস্কৃতিক কৃষ্টি কালচার ঐতিহ্য আছে কি টিকে?এমনি ভাবে চট্টগ্রাম,সিলেটবাসীর কৃষ্টি কালচার ঐতিহ্য কি পারছেন তারা ধরে রাখতে?বাংলাদেশের বাংগালী ঐতিহ্য কি পারছি বাচিয়ে রাখতেপাহাড়ে সাংস্কৃতিক কৃষ্টি কালচার পরবত সমতলের মানুষের কারণে যতটুকু হয়েছে তার চাইতে শত গুন পশ্চীমা মিশনারিদের মাধ্যমে হয়েছেনিজেদের সাংস্কৃতিক কৃষ্টি কালচার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন তাকে ধারন করা, উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন লালন-পালন করা অতি সহজ আকাশ সাংস্কৃতি এবং  তথ্য প্রবাহের যুগে শ্রোতের অনুকুলে ভাসিয়ে দিলে তা থাকবে কিভাবে?আমাদের দেশের ঘরে ঘরে যে কোন অনুষ্ঠানে বম্বের সাংস্কৃতিক একছত্র আধিপত্য চলছে ছেলে-মেয়েদের কম বেশী  হিন্দী ভাষা জানা আছেএসব কি ভারত আমাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে দেয় নাই আমরা তা নিজেরাই গ্রহণ করেছি

আমাদের মনে রাখতে হবে চারিদিকের পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক পরিবত হয়েছেদেশ ও জাতির স্বাথে’ প্রয়োজন বিগত পনের বছরের আমাদের অনেকের অভ্যাসগুলি পরিবত করাএকটা গ্রাফিতি পরিবতনের ইস্যু নিয়েআদিবাসীস্বীকৃতি জন্য নানা রকম বিবৃতিতে ইনটেরিম সরকারের সমালোচনা দেশকে মৌলবাদী বলার আগে আমদের সকলকেআদিবাসী-জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র-২০০৭ভালো করে দেখা এবং বোঝা অনেক বেশী দরকারবিচ্ছিনতাবাদী কুকিচীন সহ অসংখ্য অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অধ্যুষিত পাহাড়ে আমরা কি চাইছি   বাংলাদেশের সেনাবাহিনী  না রেখে সাবোভৌমকে হুমকির মুখে ফেলতে ?সমতলের কেহ পাহাড়ে থাকতে না পারলে সমান অধিকার থাকলো কোথায়?“আদিবাসীস্বীকৃতি আদায়ের পক্ষে দাড়ানোর আগে বেশী করে ভাবতে হবে আমাদের কম'কান্ড দেশ বিরোধী কম'কান্ড হিসাবে বিবেচনা করার সুযোগ করবে কিনা?

ভারত শুরু থেকেই ২৪/জুলাই বিপ্লবকে মানতে পারে নাই এখনও ডঃ ইউনুসের ইনটেরিম সরকারকেও মানতে পারছে নাভারতের আগ্রাসী তৎপরতায় সীমান্ত পিলার থেকে ১৫০ গজের নোম্যান্স ল্যন্ড এর আন্তজাতিক আইন অমান্য করে কাটা তারের বেড়া নিমা ভারতীয় নাগরিকরা বিএসএফ এর সহযোগীতায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে গাছ এবং ফসল কাটা নিয়ে উত্তেজনা অন্যদিকে বাংলাদেশ-ইয়াঙ্গুন সীমান্তে নতুন রাষ্ট্র তৈরীর সম্ভবনায় সেখানেও উত্তেজনা১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনাথীপ্রত্যবত আজ অনিশ্চিত প্রয়োজন যখন জাতীয় এক্য সেখানে নিবাচন এবংআদিবাসীইস্যুতে জাতির মাঝে দেখা দিয়েছে অনৈক্যরাষ্টের অখন্ডতার ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধআদিবাসীইস্যুতে এখন কোনো প্রকার রাখ ঢাক না করে সরকারের ষ্পষ্ট বয়ান অতি আবশ্যক ইনটেরিম সরকারের কাছে সমস্যার সামাধান আশা করা যাবে নাকিন্তু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমান অধিকারের বাংলাদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশী কিভাবে শান্তিতে সম্প্রীতিতে পাশাপাশি বসবাস করতে পারি তার একটা রুপরেখা প্রস্তাব আকারে নিবাচীত সরকারের বিবেচনার জন্য রাখা যেতে পারেতা না হলে কিছুদিন পরপরই এই ইস্যুতে রাস্তায় মিছিল হবে হাঙ্গামা হবে শান্তি-শৃংখলা বিনষ্ট হবে, শান্তি-সম্প্রীতি নষ্ট হবে  দিনে দিনে একে অপরের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হবে দেশের অগ্রগতি থমকে যাবে,জনজীবনে ভোগান্তি হবে যা কোনো ভাবে বতমান সংকটকালীন বাংলাদেশে কাম্য হতে পারে না

https://www.youtube.com/channel/UCO9Em15PgixJY8mgVh78rjA

প্রকাশ ঃ আলোকিত বাংলাদেশ তাঃ২৩/০১/২০২৫ইং