বাংলাদেশের সাথে ভারতের বৈরী আচরণে প্রধান
উপদেষ্টা দেশের সকল রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলোচানায় জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন।অন্যদিকে
আন্তজা’তিক অপরাধ ট্রাইবুনাল শেখ হাসিনার সকল প্রকার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম
ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।আগের সকল প্রকার
বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সরাতে নিদে’শ দিয়েছেন বিটিআরসিকে।অবাক লাগে চার মাস পার পার
হয়ে গেছে হাসিনার নিদ্দে’শে শুধু জুলাই বিপ্লবে শত শত মানুষ নিহত হাজার হাজার
মানুষ আহত হয়েছে।দীঘ’ পনের বছরের শাসন আমলে গুম খুন হয়েছে কয়েক হাজার।তার ভেতর
কোনো অপরাধ বোধ বা অনুশোচনা নাই।ভারতের আশ্র্য়ে থেকে এখনো ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন
দেখছেন।অথচ বাংলাদেশের মানুষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার কোনো ইচ্ছা নাই ।এখনো তার
মনে ভয়ংকর জিঘাংসা?মনে পড়ে ৭৫ পরবতি’তে বিবিসির সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাতে হাসিনা
বলেছিলেন তিনি রাজনীতিকে ঘৃণা করেন।তবে ১৫ আগষ্ট ৭৫ এ তার পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনকে
হত্যা করে যারা উল্লাস করেছেন তাদের এক মুহুত্’ শান্তিতে থাকতে দেবেন না।দেশের
মানুষের এতো নিম’মতা এতো নৃশংসার পরও সেই ইচ্ছা পুরণে বাকি আছে কি তার?
২০১৮ইং সালে জাতীয় নিবা’চনের আগে আওয়ামী লীগ নেত্রী,তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমি ভারতকে যা দিয়েছি ভারত তা
সারা জীবন মনে রাখবে।তিনি ঠিকই বলেছিলেন।ভারতবাসী সারা জীবন হাসিনাকে
মনে রাখবে কিনা জানা নাই তবে নরেন্দ্রমোদী ভোলেন নাই।তিনি মনে রেখেছেন।জুলাই
এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে নিব্বি’চারে শত শত ছাত্র জনতা হত্যা ,লাশ
পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা, হাজার হাজার মানুষকে রক্তাক্ত আহত করে জন-রোষে প্রাণ বাচাতে হাসিনা
চোরের মতো ভারতে পালিয়েছেন।নরেন্দ্রমোদী প্রতিদান হিসাবে হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন।তার
দেখ ভাল এর ব্যবস্থা করেছেন।তাকে পুন'বাসনের জন্য একজন রাষ্ট্রদ্রোহী
মামলার আসামী, শিশু নি্যা'তনকারী এবং অনৈতিক
কম'কান্ডে জড়িত এক ব্যক্তিকে দিয়ে দাংগা বাধানোর চেষ্টা করছেন।১৮কোটি মানুষের
বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশের ইনটেরিম সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মিডিয়ায় নিত্য নতুন প্রপাগাণ্ডা
চালিয়ে বিদেশে বিভিন্ন ফোরামে তা তুলে ধরছেন।হাসিনাকে ভারতে বসে তার ফেলে যাওয়া
নেতা-কর্মীদের উচকানি দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করার সুযোগ দিয়েছেন।
ভারতের সব সরকার সকল সময়ই আওয়ামীলীগকে পছন্দ করে
আসছে।আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতীয় সব সরকারই সকল প্রকার সহযোগীতা দিয়েছে।কিন্ত্
কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি প্রধান নরেন্দ্রমোদী সরকারের সাথে হাসিনা সরকারের
সম্পক’ গড়ে উঠেছিল সব্ব’ কালের সব্ব’উচ্চতায়।নরেন্দ্রমোদী হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে
বিরোধী মতের লোক দমন-পীড়নে,গুম-খুনে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিমু’ল করতে সহযোগীতা
করেছে।এভাবে একটানা দীঘ’ পনের বছর ক্ষমতায় রেখে স্বৈরাচার বানিয়েছে।বিনিময়ে নাম
মাত্র শুল্কের মাধ্যমে ট্রানজিট নেওয়া,অধিক মুল্যে আদানীর বিদ্যুত বাংলাদেশের কাছে
বিক্রির ব্যবস্থা সহ ভারতের প্রয়োজনে যা কিছু নেওয়ার সবই নিয়েছে।কিন্ত সীমান্তে
বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা এখনো বন্ধ করে নাই, তিস্তার পানি চুক্তিও করে
নাই।তিস্তার পানি চুক্তি না করলেও ফেনী নদীর পানি নিতে চুক্তি ঠিকই করেছে।আগামী
২০৪০ সাল পয্য’ন্ত হাসিনার ক্ষমতায় থাকার জন্য হয়তো বাকি ছিল সিকিমের লেন্দুপ
দজি’র মতো ভারতের কাছে বাংলাদেশ তুলে দেয়া।সময়ের অভাবে হয়তো বা তা করে যেতে পারেন
নাই ।
১৮ই এপ্রিল,২০০১ সালে বড়াইবাড়ি সীমান্তে বিডিআর
হত্যায় ভারত আক্রমণ করলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।শোনা যায় প্রতিশোধ নিতে
ভারতীয়রা পিলখানায় বোমা ফেলার পরিকল্পনা করেও পরে তা পরিবত’ন করে।কিন্তু বিডিআরকে
দূব’ল করতে নেতৃত্বে থাকা সেনা অফিসার হত্যার পরিকল্পনা করে।বিডিআর এর ভেতর
ডাল-ভাত ইস্যু তৈরী করা ছিল।২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সালে হাসিনা ভারতকে সনতুষ্ট করতে
পিলখানায় দেশ-প্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার জড়ো করে সুপরিকল্পিত বিদ্রোহ ঘটিয়ে
ভারতের সহযোগীতায় পিলখানায় ৫৭ জন সেনাকম’কতা’সহ ৭৪ জনকে হত্যার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে
দুব’ল করার পরিকল্পনা সম্পাদন করা হয়।সরকারের গঠিতে তদন্ত কমিটির তদন্তে আসল ঘটনা
জানতে পারা যাবে আশা করি।২০১৪ এর নিবা’চন এরশাদের জাতীয় পাটি’সহ সকল বিরোধী
রাজনৈতিক দল বয়কটের ঘোষনায় ২০১৩ সালে সম্ভবত ডিসেম্বরে তৎকালীন ভারতের পররাষ্ট্র
সচিব সুজাতা শিং কে দিয়ে এরশাদকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাতানো ভোটের ব্যবস্থা করেছে।প্রশাসনকে
দিয়ে দিনের ভোট রাতে করে বারবার ক্ষমতায় বসেছে।দীঘ’ পনের বছর দেশের রাজনৈতিক
দলগুলি সকল চেষ্টা করেছে হাসিনাকে হটানোর।কিন্তু দমন-পীড়ন, মামলা-হামলা গুম-খুন
নৃশংষতায় তা সফল হয় নাই।বিরোধী দলীয় নেতা-কমী’দের ঘর ছাড়া সংসার ছাড়া করে বছরের পর
বছর ক্ষমতায় থেকে দলিয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তর ধংস করে নেতা-কমী’,
আমলা কামলা আত্মীয়দের দিয়ে দেশ লুটপাটের ব্যবস্থা করেছেন।
একটা অরাজনৈতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের কোটা বিরোধী
আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতি বলে হাসিনার কটাক্ষ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ আওয়ামীলীগ এবং
দলদাস আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নারকীয় হত্যাকান্ড শুরু করলে ছাত্র-জনতা ক্ষোভে
সরকার হটাও একদফা আন্দোলনে নামেন।জনরোষে প্রাণ বাচাতে হাসিনা পদত্যাগ করে নেতা-কমী’
সবাইকে ফেলে ভারতে আশ্রয় পেতে পালিয়ে যায়।ভারতের নরেন্দ্রমোদী যাকে এতদিন সকল প্রকার
সাহায্য সহযোগীতা দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে সু্যোগ নিয়ে যাচ্ছিলেন তার এমন পরিণতি সম্ভত আচ
করতে পারেন নাই।নরেন্দ্রমোদীর আগ্রাসী–আধিপত্যবাদী কম’কান্ডে প্রতিবেশী সব কয়টি দেশের
সাথে ভারতের সম্পকে’র অবনতি ঘটেছে মালদ্বীপের পর সব’শেষ বাংলাদেশ হাত ছাড়া হয়ে যাওয়া
মেনে নেওয়া তার জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে।মেনে নিতে পারছেন না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র
আন্দোলনকারীদের জুলাই বিপ্লবকে।মানতে পারছেন না ডঃ ইউনুসের ইনটেরিম সরকারকে।
তাই বিজেপি নেতাদের দিয়ে,মিডিয়া দিয়ে কল্পিত হিন্দু
নিযা’তনের গল্প ফেদে নিজ দেশে যেমন আগামী নিবা’চনের ফায়দা লুটতে চাইছেন।তেমনি একটা
প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে বাংলাদেশে তাবেদার হাসিনাকে পূন’বাসনের চেষ্টা করছেন।ভাবতে কষ্ট
হয় ভারতের নরেন্দ্রমোদী সরকার কি এতোই দেওলিয়া হয়ে গেছে রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের সুসম্পক’ না গড়ে একজন পতিত স্বৈরাচারীকে পুন'বাসনের চেষ্টা
করছেন ?ভারতীয় অতি আবেগী কিছু নেতাদের হুমকি-ধামকি লম্ফ-ঝম্পে
মনে হচ্ছে ভারত বুঝি আক্রমণ করে এখনই বাংলাদেশ দখল করে ফেলবে।সবাইকে বুঝতে হবে বন্ধুত্ব হতে হবে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে ,কোনো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে নয়।কোনো দেশের আভ্যন্তরিন ব্যপারে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেও নয়। যুদ্ধ-বিগ্রহ
দাঙ্গা-হাঙ্গামায় শান্তি আসে না তাতে আনে কেবলই মৃত্যু আর ধংস, আনে মানবিক বিপয’য়।
মাথায় রাখতে হবে দাংগার আগুনে প্রতিবেশি ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ পুড়লে তার আচে ভারত ও পুড়তে পারে । সারা বিশ্ব দেখেছে ভারতের সংখ্যালঘুদের জয়শ্রীরাম শ্লোগান দিয়ে হত্যা করতে ।দেখেছে
নামাজ পড়তে দেওয়া হয় নাই।দেখেছে মসজিদ গুড়িয়ে মন্দির করতে ।দেখেছে বুলডোজার দিয়ে ঘর বাড়ি মাটির সাথে মিশিয়ে মুসলমানদের উদ্বাস্তু করতে ।দেখেছে গত ২৪/১১/২৪ ইং তারিখে
ভারতের উত্তর প্রদেশের
সম্ভল জেলায় মোগল
আমলের শাহি জামে
মসজিদ হিন্দু মন্দিরের
উপর নিম্মি’ত অজুহাতে
বিজেপি সরকারের
সাভে'র প্রতিবাদ
করায় ৪ জন মুসলিমকে
হত্যা করা হয়েছে।মুসলিম
নেতা সহ মামলা
হয়েছে অনেকের নামে।শুধু
তাই নয়
বিজেপি এখন মন্দিরে দেবতা না খুঁজে মসজিদ সহ বিভিন্ন মুসলিম স্থাপনার নিচে শিবলিঙ্গ খোঁজা শুরু করেছে।দাবি ভারতের সকল মসজিদ ও
মুসলমানদের স্থাপত্ব্য হিন্দুদের মন্দিরের
উপর নিমা'ন
করা হয়েছে।বাদ যাচ্ছে
না ঐতিহাসিক
তাজমহল,ভারতের ধম'-বণ' নিব্বি'শেষে সকলের নিকট
পবিত্র আজমির শরীফও।কারণ আর কিছুই
নয় অযোধ্যার বাবরী
মসজিদের মতো
সকল মুসলিম স্থাপনা
ভেঙ্গে ফেলতে হবে।বিশ্ব দেখছে ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করে আগরতলায়
বাংলাদেশ হাইকমিশন ধংস করতে, কম’কতা’দের হেনস্তা করতে।রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পশ্চীমবঙ্গের মমতা ব্যনাজী’
মিডিয়ার প্রপাগান্ডায় শরীক হয়ে বাংলাদেশে শান্তি রক্ষী পাঠানোর কথা বলছেন।ভারতে সংখ্যালঘুদের
উপর এতো সব অত্যাচার,অমানবিক কম’কান্ড বন্ধে ভারত সরকারের ব্যাথ’তার জন্য সেখানেও শান্তি
রক্ষী পাঠানোর কথা ভাবা যাবে কি ?কি বলবেন মমতা ব্যনাজী’?
বাংলাদেশের মানুষ ভারত বিরোধী নয় তবে মোদী সরকারের বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে কম'কান্ড তার আগ্রাসী-আধিপত্ববাদীতে বিক্ষুদ্ধ।প্রকৃতপক্ষে
এপার ওপার দুই দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের কারো সাথেই কারো কোন বিবাদ কখনো ছিল না এখনো নাই। তাই তো
জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার পক্ষে ভারতীয়রা যেমন রাস্তায় নেমেছে তেমনি বাংলাদেশের মানুষ
আরজি কান্ডে সংহতি জানিয়েছে।রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে রাজনীতিকরা হিন্দু-মুসলিম কিংবা সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু
বিভেদের মাঝে ঘড় পোড়া আগুনে আলু পুড়িয়ে খাওয়ার
মতো ফায়দা লুটতে চায়।আসুন আমরা হিংসা-বিদ্বেষ না ছড়াই । রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের , রাষ্ট্রের মানুষের সাথে
রাষ্ট্রের মানুষের সুসম্পক’ গড়ি।প্রয়োজনে বিপদে-আপদে একে অপরকে সাহায্য সহযোগীতা করি।সু-প্রতিবেশী হিসাবে সুখে শান্তিতে পাশাপাশি বসবাস করতে চেষ্টা করি।
সুখের খবর এতো বৈরীতার মাঝেও দুই দেশের পররাষ্ট্র
সচীবদ্বয়ের বৈঠক হয়েছে।বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের বিএসএফ এর সংখ্যা বৃদ্ধি, অ্যান্টি
ড্রোন মোতায়েন ,ভারতীয় কোষ্টগাড’ কতৃক বাংলাদেশের জলসীমা থেকে নাবিকসহ মাছ ধরার ট্রলার
ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।প্রত্যাশা করি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিযা’তনের মিথ্যা অজুহাতে,এক পতিত স্বৈরাচারী আর একজন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামী, শিশু নি্যা'তনকারী,অনৈতিক কম'কান্ডে জড়িতের
পক্ষ নিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় মানবিক বিপয’য় ঘটানোর আগুন জ্বালাবার নিবু'দ্ধিতার কাজ করবেন না নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী।বরং
বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করে ১৫০কোটি মানুষের বৃহত্তর দেশের নেতা হিসাবে বাংলাদেশের
ইনটেরিম সরকারকে স্বৈরাচার হাসিনার একেবারে ধংসপ্রায় ফেলে যাওয়া বাংলাদেশকে পুন’গঠনে
সহযোগীতা করবেন।দক্ষিণ পুব’ এশিয়ায় শান্তি ও অগ্রগতিতে অগ্রনী ভুমিকা
পালন করবেন।
No comments:
Post a Comment