Monday, July 28, 2025

সমস্যা ধমে'র নয় সমস্যা রাজনৈতিক, রাস্ট্র নায়কদের দৃষ্টিভঙ্গির

আমাদের অজ্ঞতা আমাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত যেমন করে আবার জানা সত্তেও সজ্ঞানে কাজটা করি কখনো  বাহবা পাওয়ার আশায়,কখনো বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর নিকট থেকে বিশেষ কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য। ৭১ এ বিতর্কিত কম'কান্ডে  জড়িত  এক বিশিষ্ট ভদ্রলোক শাহরিয়ার কবির।জুলাই বিপ্লবের পর এখন তিনি জেল হাজতে। অতি  ভাবগাম্ভীর্যের অধিকারী বুদ্ধিজীবি,অসাম্প্রদায়ীকের ঝান্ডাধারী আমাদের সংবিধান  থেকে বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম মুছে ফেলতে হবে আব্দার করছিলেন।রাস্ট্র ধম' ইসলাম বাতিল করতে চেয়েছিলেন। শিশুদের পাঠ্যবইয়ে "ও তে ওড়না" উল্লেখ থাকায় সেখানে শুকে শুকে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়েছিলেন।তার অন্যান্য সঙ্গী সাথীরা গা ঢাকা দিয়ে আছে।এরা বাংলাদেশে বাস করে বাংলাদেশের সবকিছুতেই সাম্প্রদায়ীকতা খুঁজে পাইতে চাইতো।এদের বাহিরের খোলসটা যতটা অসাম্প্রদায়ীক ভেতরটা তার চাইতে বেশী সাম্প্রদায়িক।বিশেষ করে ইসলামের কথা শুনলেই এদের চুলকানিটা বাড়ে।ধমী'য় বিষোদগার কুৎসা রটনায় ছিল সিদ্ধহস্ত, ৭১ এর চেতনায় একেবারে ছিলেন উন্মাদপ্রায়। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতার অন্য স্তম্ভ গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র  নিয়ে তাদের ছিল না  কোনো উচ্চবাচ্য।ন্যায়বিচার নিয়েও দেখি নাই তেমন সাড়া শব্দ।প্রয়াত সনামধন্য  লেখক হুমায়ুন আহমেদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত এভাবে দিয়েছিলেন “আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজে যাঁরা আছেন, তাদের কার্যক্রম খুব একটা পরিষ্কার না।এরা কেন জানি ইসলাম ধর্মকে খুব ছোট করে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান  অন্য ধর্মের উৎসবে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকেন, বক্তৃতা করেন, বাণী দেন- কিন্তু ইসলামী কোনো জলসায় কেউ উপস্থিত হয়েছেন বলে শোনা যায় না। তাদের মতে, ইসলামি জলসায় কেউ উপস্থিত থাকা মানে তার বুদ্ধিবৃত্তি নিম্নমানের। সে একজন প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক লোক।আমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টানদের কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অর্থ মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা, প্রগতির চর্চা করা, সংস্কারমুক্ত হওয়া ইত্যাদি।"(গুগল থেকে প্রাপ্ত).

ইসলাম  রাষ্ট্র  ধম' হলে যে  একটা বিরাট কিছু  হয়ে যাবে তা যেমন নয়, তেমনি অন্য কোনো  ধমে'র লোক থাকতে পারবে না বা তাদের ধম'কমে' জীবন যাপনে প্রতিবন্ধক হবে এটা বিশেষ গোষ্ঠীর ইসলামের বিরুদ্ধে  প্রপাগাণ্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়।বত'মানে ইসলামকে রাষ্ট্র  ধম' করা যতোনা  ধমী'য় তার হাজার  গুন বেশী  উদ্দেশ্য  রাজনৈতিক অবশ্যই তা পরিবর্তন এবং পরিবধ'ন করে।সোজা কথায় ক্ষমতায়  যাওয়া বা দীর্ঘদিন  আকড়ে থাকার বাহনা মাত্র।ইসলামী শাসক রাজা বাদশা দিয়ে যদি ইসলাম কায়েম হতো তাহলে শতশত বছরের বেশী মুসলিম রাজা বাদশাহ শাসিত ভারতে কোনো হিন্দুই থাকার কথা নয়।অথচ ভারতে আজ একশো কোটির বেশী হিন্দু ধমা'লম্বীর বসবাস।এই শত কোটি হিন্দু ধমা'লম্বীর দেশ ভারতকেও হিন্দুস্থান করলে বা বললে অসুবিধার থাকার কিছুই নাই।কিন্তু কট্টর উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদি প্রায় ত্রিশকোটি মুসলমানকে বিতাড়িত করার যে অমানবিক ব্যবস্থা নিয়েছে সেটাই সমস্যা। আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিবেচিদের সকাল সন্ধ্যার নমস্য দিল্লির এই বব্ব'র কালাকানুনের বিরুদ্ধে ভারতব্যাপী ধম’বন’নিবি'শেষে সকল শান্তি প্রিয়  মানুষেরা প্রতিবাদের ঝড় তুলতে পারলেও আমাদের দেশের এই আজব প্রজাতির বুদ্ধি-বিবেক কখনো জাগ্রত হয় নাই,এখনও হবে আশা করা যাবে না।

ইসলাম একটা শান্তির ধম' মানবতার ধম'।তার অনুসারী হচ্ছে মুসলিম তথা মুসলমান।একজন মুসলমানকে আল্লাহ এবং তার প্রেরিত রসুল আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) কে মনে প্রানে ধারন করে কুরআন এবং হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে হবে।যে ব্যাক্তি কুরআন এবং হাদিসের হুকুম আহকাম মেনে চলতে পারে সে-ই একজন প্রকৃত মোমেন মুসলিম।শুধু নামে আর দাড়ী টুপী লেবাসে মুসলিম মুসলমান তকমা লাগিয়ে তার অমানবিক কম'কান্ডকে দিয়ে ইসলামকে কলংকিত করা যাবে না। কারণ শুধুমাত্র  জন্ম সুত্রে নামধারী লেবাসধারী কোনো মুসলিম তথা মুসলমান কাউকে হত্যা করে হত্যাকারী হতে পারে, কোনো মুসলিম কোনো নারীকে শ্লীলতাহানি করে মানবতা বিরোধী কাজ করে ধষ'ক হতে পারে সেই জন্য ব্যাক্তি দায়ী।যদি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্র দায়ী হবে কিন্তু ইসলাম নয়।কারণ ইসলাম কাউকে এমন অমানবিক হবার শিক্ষা দেয় না।ইসলামে উগ্রতার স্থান নাই আছে নম্রতার আছে মহানুভবতার।ইসলামে বিনা বিচারে হত্যাকে মহাপাপ বলা হয়েছে, বলা হয়েছে  সে শুধু একজনকেই হত্যা করলো না সে যেনো গোটা একটা জাতিকে হত্যা করলো।ধষ'ণ দুরের কথা কোনো মহিলার দিকে  কোনো পুরুষের দ্বিতীয়বার তাকানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।আর তাই ধষ'কের জন্যও রাখা হয়েছে কঠিনতম শাস্তি।নারীকেও তার আব্রু রক্ষা করার সাথে সাথে তার দৃষ্টিকে অবনত করে চলতে বলা হয়েছে।

ইসলাম বলে একজন মোমেন হচ্ছে সেই ব্যাক্তি যার জিভ এবং হস্ত থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ।বলা হয়েছে প্রতিবেশীকে অভুক্ত অনাহারে রেখে কেহ পেট  ভরে  খেয়ে ঘুমালে সে প্রকৃত মোমেন হতে পারে না।সুতরাং একজন মোমেন মুসলিম তথা মুসলমানকে তার প্রতিবেশীর হক আদায়ের জন্য যে বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে একটা রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র প্রধানের তার ধম'বণ' নিবি'শেষে সকল নাগরিকের কল্যাণের জন্য দায়িত্ব  কত'ব্য অনেক অনেক বেশি।মানুষকে অনাহারে রেখে,আইন-কানুন ইচ্ছে মতো ব্যবহার করে, মানুষের ধম' কমে' বাধা দিয়ে আধুনিক গনতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধম'নিরপেক্ষতার ঝান্ডা উড়ানো যেতে পারে কিন্তু ইসলাম এর নয়।চারিদিকে তাকালে সেই চিত্রই দেখতে পাই।প্রত্যেকটা মুসলিম রাস্ট্রই ভ্রাতৃঘাতী হানাহানিতে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত।ক্ষমতায় থাকার জন্য যেমন বিরোধী নিজ জনগণের  উপর জারি রেখেছে  হত্যা,অত্যাচার নিপীড়ন জেল জুলুম তেমনি প্রতিবেশীর সাথে রাখতে পারে নাই সু-সম্পক’।ইজরাইল ফিলিস্তিনীদের উপর যে নৃশংসতা-নিম’ম বব্ব’তা চালিয়ে জাতিগত নিমু’লে লিপ্ত থাকলেও ফিলিস্তিনীদের রক্ষায় প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলি কেবল নিন্দা আর বিবৃতি দিয়ে চোখ বুঝে আছে।তাহলে কোথায় ইসলামের শিক্ষা ?কোথায় ভাতৃত্ববোধ ? কোথায় মানবতাবোধ?এটা কোনো ইসলাম নয় এরা ইসলামের লেবাসধারী বিশ্বাসঘাতক।এরা ভোগবাদী তাদের অনৈতিক কম'কান্ডকে জায়েজ  করতে  ধম'কে বম' হিসাবে ব্যবহার করে ইসলামকে বিতর্কিত করছে।

ইসলাম কোনো ব্যাক্তির  একক অপরাধে  তার পরিবার তার সমাজ তার সম্প্রদায়কে অপরাধী  করার অধিকার দেয় নাই।ইসলামই তো নয়ই,কোনো ধম'ই অমানবিকতার পাশবিকতার অনুমোদন দেয় নাই। গুজরাটের মুসলিম নিধনের নায়ক, গোমাতা রক্ষার  নামে  মুসলিম নিধনের পরিকল্পনাকারী,সমতার অযুহাত দিয়ে বিশেষ সুবিধা তুলে নিয়ে কাশ্মীরিদের জীবন দুবি'ষহ করার কারিগর, NRC এবং CAA আইনের মাধ্যমে ধমী'য় অসম বিভাজন করে বাংগালী ভারতীয় মুসলমানদের বাংলাদেশী বলে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিতারন করে অসাম্প্রদায়ীক ভারতের বিনাশকারী দামোদর মোদি  হিন্দু ধমে'র ধারক  বাহক হতে পারে না। আমরা ৭৫ পরবতি’তে দেখেছি আজ ২৪ পরবতি’তেও দেখছি একই কায়দায় বাংলাভাষী মুসলমান ভারতীয়দের পুশ ব্যাক করছে বাংলাদেশে।এমন কম’কান্ডকে কোনো ভাবে সু-প্রতিবেশি সুলভ আচরণ মনে করার কোনো সুযোগ নাই।    

একটা ব্যাপার সবারই জানা  খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের সুবিধার উপর নিভ'র করে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের আবাস গড়ে উঠেছে,ধমে'র ভিত্তিতে নয়।আধুনিক যুগে এসে মানুষ তার সুখ-সাচ্ছন্দ্যের উন্নতির জন্য অধিক অথ' লাভের আশায় মৃত্যু হতে পারে জানা সত্বেও পাড়ি জমায় উত্তাল মহাসাগর তপ্ত ধু ধু মরুভূমি লক্ষ্য ইউরোপ-আমেরিকা ইতালী।একসময় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অনিবন্ধিত ভারতীয়দের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলায় বাংলাদেশের এক সময়ের বিদেশ মন্ত্রী যথাথ'ই বলেছিলেন"বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে সাগর পাড়ি দিতে হলেও যাবে কিন্তু ভারতে নয়"।কথার বাস্তবতা আছে।তবে ভারত হিন্দু ধমা'লম্বীদের তীথ'স্থান।সুযোগ সুবিধা পেলে হিন্দু ধমা'লম্বী যে কেহ অধিক আগ্রহে সেখানে যেতে এবং থাকতে চাইতে পারে।ঠিক তেমনই দুনিয়ার যে প্রান্তে মুসলমান থাকুক না মুসলমানদের পবিত্র ভুমি মক্কা মদিনায় সুযোগ সুবিধা পেলে যে কোনো মুসলমান যাবেই।যদি কোনো বাংলাদেশী অবৈধ ভাবে ভারতে থেকে থাকে তাকে আন্ত’জাতিক বিধি অনুযায়ী প্রত্যা’পন করা যায় রাতের আধারে চুরি করে নিষ্ঠুরভাবে সীমান্তে ঠেলে পাঠানো মানবিক হতে পারে না।খবর বেড়িয়েছে বাংলাদেশ সিমান্তবতী’ প্রায় ১০ লাখ মুসলিম অধ্যুষীত আসাম রাজ্যে আদিবাসীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেছে বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরকার। ২০১৯ সালের এন আর সি অনুযায়ী প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল তার অধিকাংশই মুসলিম বলে শোনা যায়।আশঙ্কা আসাম সরকার না জানি কোন খেলায় মেতেছে।

আজ সারা বিশ্বে  ধমী'য়' উন্মাদনা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষীত হতে দেখা যাচ্ছে।অতি ঘনবসতিপুন' বহু ধম',ভাষাভাষী অধ্যুষিত ভারতবষ' তার থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।রাষ্ট্র নায়কদের একটি মাত্র ভুল এ অঞ্চলে মানবিক চরম বিপয'য় ঘটাতে পারে।হিন্দু রাস্ট্র নাকি ইসলামিক রাস্ট্র এটা কোনো সমস্যা নয় কারণ রাস্ট্রের দায়িত্ব তার জনগণের কল্যাণে কাজ করা।প্রত্যেকটি মানুষের জন্য ধম' বণ' নিব্বি'শেষে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসা শিক্ষা ও নিরাপত্তা বিধান করাই রাস্ট্রের দায়িত্ব ও কত'ব্য।দুনিয়ার কোনো ধম'ই মানুষকে দানব হতে বলে নাই।মানুষরুপী দানবকে মানুষই হতে বলে।আমরা যারা নিজেদেরকে বড় বেশী অসাম্প্রদায়িক বলি আসলে তারাই বেশী সাম্প্রদায়িক আবার যারা নিজেদেরকে বড় বেশী ধামি'ক বলে জাহির করি আসলে তারাই বেশি অধামি'কের কাজ করি।আমরা সত্যিকার ধমী'য় শিক্ষা পাচ্ছি না আর যতটুকু পাচ্ছি তা নিজ জীবনে লালন পালন করি না।তাই দিন শেষে বলতে পারি আমরা সভ্য হতে পারি নাই।কাম ক্রোধ লোভে কেহই মানুষ হতে পারি নাই।প্রকৃত সমস্যা  ধমে'র নয়  সমস্যা  রাজনৈতিক, রাস্ট্র  নায়কদের দৃষ্টিভঙ্গির।আমাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবত'ন ঘটাতে হবে আগে মানুষ হবার জন্য।শেষ করতে চাই মোহাম্মদ রাফির একটা গানের প্রথম লাইন দিয়ে "তু হিন্দু বনেগা না মুসলমান বনেগা ইনসানকি আওলাদ হে ইনসান বনেগা"।

https://www.youtube.com/channel/UCO9Em15PgixJY8mgVh78rjA


No comments: