Wednesday, October 2, 2019

কতো দিনের জন্য থাকতে হবে অপেক্ষায়

এক সময় সরকারি  আমলা,কম'কতা' কম'চারী সকলের বেতন ভাতা সু্যোগ সুবিধা কম ছিলো।বউ বাচ্চা কাচ্চার ভরণপোষণ শিক্ষা খরচ সামাল দেওয়া নাকি সম্ভব ছিলো না। তাই অনেকেই ঘুষ দুনী'তিতে জড়াতে বাধ্য হতেন।বত'মান হ্মমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সেই দিকটা বিবেচনায় রেখে ঘুষ দুনী'তি রোধ করার লক্ষে বেতন ভাতা সু্যোগ সুবিধা অনেক বেশি বাড়িয়েছে।সেই সুবাদে বত'মানে সরকারি কম'চারী-কম'কতা' আমলারা দেশের সবচাইতে বেশি সুযোগ সুবিধাভোগী।
কিছু দিন আগেও উচ্চাভিলাষী ছেলে-মেয়েদের সরকারি চাকরির প্রতি খুব একটা আগ্রহ ছিলো না।বত'মানে সবারই প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য যে ভাবে হওক সরকারি চাকুরী একটা বাগানো, আর তাতেই কিল্লাফতে। যতোদিন জীবন ততোদিন নিশ্চিত জীবিকার।সেই সুবাদে একটা পিওন চাপরাশির চাকুরির জন্য নাকি হাকা হয় সাত/আট লাখ টাকা।বিভিন্ন সংস্থার ছোট ছোট পদের জন্য ঘুষ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পত্রিকায় বড় বড় বিজ্ঞাপন দিতে হয়।উপরের পদের জন্য কি পরিমাণ লাগতে পারে তা আর বলার প্রয়োজন নাই।শুধু এখানেই শেষ নয় সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় বড়ো বড়ো রাজনৈতিক দলে ভিড়তে, নিবা'চনে নমিনেশন পেতে চলে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বানিজ্য।দুনী'তির শুরু তো এখান থেকেই, সুতরাং তা থামাবার সাধ্য কার। 
সতেরো কোটি মানুষের দেশে আনুমানিক বিশ লক্ষ সরকারি কম'কতা'-কম'চারী, আমলা, এম পি মন্ত্রীর সুখ শান্তি এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সরকারি সকল সেবার মূল্য বিভিন্ন অজুহাতে বাড়ানো হয়৷মনে হয় তারা সব আগেকার দিনের রাজা বাদশাহ জমিদারদের পাইক-পেয়াদা বরকন্দাজ।জনগণের যা হয় হউক জমিদার আর পাইক পেয়াদা ঠিক থাকলেই হবে।একেক জন নিবা'হীর জন্য প্রায় কোটি টাকার গাড়ি, রক্ষণাবেক্ষনে প্রায় অধ' লক্ষ টাকা।সুযোগ সুবিধামতো সদলবলে বিদেশ ভ্রমন, সবইতো জনগণেরই টাকা।সরকারের কর বলি আর সেবার মূল্য বলি,তা বাড়ানোর খবর বাজারে আসতে না আসতে ঘড় ভাড়া,গাড়ি ভাড়া দ্রব্য মূল্য সবই বাড়তে থাকে।কিন্তু ষোল কোটি আশি লক্ষ মানুষ তাদের তো পয়সা বাড়ে না।তাছাড়া বাড়তি কর ট্যাক্স দিয়েও মানুষ যে তার কাংখিত সেবা পায় তা কিন্তু নয়। কারণ যেখানেই জনস্বাথ' সেখানেই ততো বেশী ভেজাল ততো বেশী দুনী'তি।প্রকৃত পক্ষে বেতন ভাতা বাড়ানোর পর দুনী'তি অপরাধ না কমে বেড়েছে অনেক বেশী।সবাই যে অপরাধী তা ঠিক না।যারা অপরাধ করতে অভ্যস্ত তারা দেখে অপরাধ করে পার পাওয়ার অপার সুযোগ।আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া এবং বিচার কাযে' দীঘ' সুত্রিতার সুযোগ থাকায় দিনকে দিন মানুষের ভেতর লোভ সাহস দুটাই বাড়ছে।ভাবখানা এমন আমরা সবাই হতে চাই অতি দ্রুত ধনবান-ক্ষমতাবান।বিভিন্ন গন মাধ্যমে যে সব ক্রাইম রিপোর্ট প্রচার হয় তা দেখে মনে হয় না কোথাও চেক এন্ড ব্যালেন্স বলে কিছু আছে।তা না'হলে রডের বদলে বাশ কান্ড,বালিশ কান্ড, বই কান্ড,পদ্দা' কান্ড এখন শুনছি শিক্ষকের চেয়ার কান্ড।খোদ রাজধানীতে সবার নাকের ডগায় কিভাবে ক্যাসিনোর হাট বসে ?মিডিয়ার লোকেরা খবর জানতে পারলে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা কি করে?বিভিন্ন সংস্থার এতো কতা'ব্যক্তি থাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদ্দে'শের অপেক্ষা করতে হয় কেনো।আসলে সাধারন মানুষের অপরাধের জন্য যে ভাবে আইন খড়্গহস্ত সরকারি কম'কতা' কম'চারীর বেলায় তেমনটি নয়।আবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নেতা-নেত্রীরা জেল জুলুমে নাস্তানাবুদ হলেও অনেক সেবকই থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
শুনেছিলাম উচ্চ পযা'য়ের কয়েক কম'কতা' মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সাটিফিকেট নিয়ে চাকুরী জীবনের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে এখন অবসরে।চলমান ক্যাসিনোর কেস এ গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা শামীমের কথিত গণপূতে'র দুই ইঞ্জিনিয়ারকে নাকি এক হাজার কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন। তারা দুজনেও এখন নাকি অবসরে।এই টাকা নেওয়ার অপরাধে তাদের কি হবে?মামলা হবে তাতে কি?সেটা চলতে থাকবে যুগের পর যুগ।ততো দিনে প্রকৃতির নিয়মেই হয়তো চলে যেতে হতে পারে তাদের পরপারে।আফসোস কি, ছেলে সন্তান সবার ভবিষ্যতই ঝকঝকে তকতকে করে দেওয়া হয়েছে।চাকুরীরত অবস্থা হলেই বা ক্ষতি কি ? চাকরি গেলে যাবে,পেনশন বন্ধ হলে হবে।যে অথ' নিয়েছে সেই অথ' দিয়ে তাদের পুরো গুষ্টির জীবন রাজার হালে চলে যাবার কথা।পেনশনের টাকার দরকার কি? জঘন্যতম নারায়ণগঞ্জের  সাত খুনের মামলা এবং আসামিদের দিকে তাকালেই তা আরো বেশি পরিস্কার হয়ে যাবে। কোথায় যেনো পড়েছিলাম অবৈধ  উপাজ'নে গড়া সম্পদ নাকি তিন প্রজন্মের বেশী ধরে রাখা যায় না।কিন্তু আমরা কিসের এবং কাদের  আশায় এতো এতো সম্পদের পাহাড় গড়ছি।
এখন সময় এসেছে জনগণের সেবক অপরাধী সরকারি কম'কতা' কম'চারী,আমলাদের বিচার ব্যাবস্থা,তাদের শাস্তির ব্যাবস্থা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করার।প্রয়োজন দ্রুত বিচার সম্পন্নের জন্য বিশেষ আদালত।তদন্ত হবে আন্তমন্ত্রনালয় কমিটি দিয়ে। প্রয়োজন অপরাধীর চাকুরীচ্যুতি।চাকুরীকালিন নিজ নামে অথবা পরিবারের কাহারো নামে ক্রয় করা সকল সহায় সম্পত্তি,ব্যংক আমানত সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমার ব্যবস্থা রাখা।কারন জনস্বাথে' সরকারের বিধিবিধান বাস্তবায়নে, সরকারি সম্পত্তির হেফাজত, বে-আইনী কম'কান্ড থেকে জনসাধারণকে বিরত রাখতে, নাগরিক সেবাদানের জন্যই তাদেরকে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিয়ে প্রতিপালন করা হয়ে থাকে।তাই তাদের পদস্খলন সাধারণ ভাবে গ্রহণ করা কাম্য নয়।ক্ষেতের ফসল বেড়ায় খেলে সেই ফসল রক্ষা করা সম্ভব নয়।তাই ফসল রক্ষা করতে বেড়া আগে ঠিক করতেই হবে।শুধুমাত্র ক্লোজ,সাময়িক বরখাস্ত কিংবা বদলি, একই বিভাগের লোকজন দিয়ে তদন্তে সীমাবদ্ধ রাখলে যে কোনো ব্যাক্তির অপরাধ করার উতসাহ ও উতসাহিত করার কমতি হবে না কখনো।যতই শক্ত কঠীন আইন হোক না কেন অপরাধ কমার আশা করা হবে স্বপ্নবিলাস মাত্র।দেশের সেবক,জনগণের সেবক এই আনুমানিক বিশ লক্ষ মানুষগুলির যারা কতা'ব্যাক্তি তারা যদি সত-নিষ্ঠাবান হন,দেশের ক্ষমতাসীন প্রত্যেকটি নেতা-নেত্রী যদি হয় কখনো সত এবং দেশ-প্রেমিক,প্রচলিত আইনকেই যদি সঠিক প্রয়োগের সু্যোগ দেওয়া হয়,নিশ্চিত এদেশের অধিকাংশ জেলখানা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে।আদালত পাড়াকে আর ঢাকার ফাম'গেটের জানজটের মতো প্রয়োজন হবে না কখনো মামলার জট নিয়ে ভাবতে।জানি কঠিন কম', কিন্তু আশা নিয়েই আমাদের বাচতে হবে।শুধু জানিনা সেই সুদিনের আশায় আমাদের কতো দিনের জন্য থাকতে হবে অপেক্ষায়।
https://youtu.be/IQPUPWUqv48