Friday, February 16, 2018

ব্যথ’তার দায় তাদেরই নিতে হবে

পানির অপর নাম জীবন পৃথিবীর তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ স্থল ঠিক তেমনি ভাবে প্রায় ৭০ শতাংশ পানি দ্বারা মানুষের শরীর গঠিত মানুষের সুস্বাস্থ্য এবং শরীরের তাপমাত্রা ঠিক  রাখতে পানি একেবারেই অপরিহায্য' বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিটি মানুষের দিনে কম করে আট গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন খাবার পানি ছাড়াও দৈনন্দিন রান্না,খাওয়া,প্রাকৃতিক কায্য',ধুয়া মোছা,কৃষিকায',পশু পালন,বিদ্যুৎ উৎপাদন, মিলকারখানা থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজন' বাস্তবতা  পৃথিবীর তিন ভাগ পানি হলেও বিশুদ্ধ খাবার পানির পরিমাণ মাত্র এক শতাংশ তাও আবার হিমবাহ বরফে আটকা  বিরাট একটা অংশ তাই মানুষকে তার নিজের প্রয়োজনে নদী সহ ভূ-উপরিভাগের অন্যান্য উৎসের পানি শোধন করে পান যোগ্য করে তুলতে হয় ইতিহাস থেকে জানা যায় পানির পযা'প্তার উপর চাষাবাদের সুবিধার কারনে  পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে মানুষের আবাস গড়ে ওঠে নদীমাতৃক বাংলাদেশে মানুষের ঘন বসতি কারন একই
মানুষের শরীরের জন্য পানি প্রয়োজন তবে তা পান করার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা একান্ত অপরিহায্য' বিশেষজ্ঞদের মতে  দুষিত পানি পান করলে পেটের নানা রকম ব্যাধি সহ ক্যানসার চম'রোগ কিডনী  লিভার সহ অন্যান্য দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারন হতে পারে দুষিত পানির কারনে শিশুদের ঘনঘন ডায়রিয়া হলে তাদের শরীরের বৃদ্ধি কমে যাওয়ায় তারা খব'কায় হতে পারে, শিশুদের ব্রেনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ায় তাদের স্মৃতি শক্তিও ক্ষীন হতে পারে দুষিত পানির কারনে নাকি দেশে কিডনী  লিভার সহ চক্ষুরোগীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু আমরা যে পানি পান করছি তা কতটুকু বিশুদ্ধ নিরাপদ তা নিয়ে আছে সংশয় শহরেই পানির পাইপে শেওলা, স্যুয়িরেজ পানির লাইনে লিকেজ  সহ নানাবিধ কারন  রয়েছে উদাহরণ তার চাইতেও বড় প্রশ্ন এই সংশয় পূন্য' পযা'প্ত পানিও আগামীতে পাওয়া সম্ভব হবে কি বাংলাদেশে
Photo : Google
ভুপৃষ্ঠে অত্যাধিক কাব' নিঃষড়নের কারনে সারাবিশ্বে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবত' এসেছে তাই দেখা যায় কোথাও অতি খরা কোথাও অসময়ে অতি বষ'নে বন্যা কোথাও আবার প্রাকৃতিক প্রবাহমান নদ নদী বাধ দিয়ে মানুষ কতৃক কৃত্রিম সংকট তৈরী করায় স্থান কাল ভেদে জীব জৈব জীবনে ব্যাপক পরিবত' বিবত' পরিলক্ষিত হইতেছে কোথাও আবার এই পানির কারণে সংঘাত সংঘষ' যে কোন সময় হামলে পড়ার আশংকাও দেখা দিয়েছে উদাহরন স্বরুপ মধ্য এশিয়ার অবিভক্ত রাশিয়ার  খিরগিস্থান তাজিকস্থান আমুদরিয়া এবং শিরদরিয়া নদীর উজানে অবস্থান তারা নদীতে বাধের মাধ্যমে বিদ্যুত পানির অধিকারী অন্যদিকে ভাটিতে অবস্থান কাজাকিস্থান, তুকি'মিনস্থান উজবেকস্থান তেল গ্যাস সম্পদের অধিকারী  কেন্দ্রীয়ভাবে সম্পদের বিলিবন্টন ঠিক থাকলেও হঠাৎ প্রত্যেকে আলাদাভাবে স্বাধীনতা পেলে সবখানে বন্টন ব্যাবস্থাপনা ঘাটতি দেখা দেয়।ফলে একে অপরের মাঝে সংকট সংশয় দেখা দেয় যা কিনা যে কোন সময় সংঘাতের কারন হয়ে দেখা দিতে পারে বলে আশংকা অনেকের  

সম্ভবতঃ বাংলাদেশ এর ব্যাতিক্রম নয় কারণ দিন দিন যে হারে মানুষের বৃদ্ধি এবং তার প্রয়োজনে কৃষিকায', ধুয়া-মোছা, মিলকারখানা ইত্যাদি যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে সে তুলনায় পানির উৎস বৃদ্ধি পায় নাই , বরং পানির উৎস নদী খাল বিল ভরাট কিংবা বজ্য' ফেলে তা ব্যাবহার অনুপোযোগী করে তোলা হয়েছে ঢাকার বূড়িগঙ্গা নদী তার জ্বলন্ত উদাহরণ শুধু তাই  নয় এক সময় গ্রামে অসংখ্য বড় বড় দিঘী পুকুর ছিল গ্রামের মানুষ পানি দিয়ে দৈন্দিন কাযা'বলি সম্পন্ন করতো তার অধিকাংশ  আজ ক্রমবধ'মান মানুষের আবাসিক প্রয়োজনে ভরাট করা হয়েছে আর যে কটা খুজে পাওয়া যাবে তাও মাছ চাষের মাধ্যমে ব্যাবহারের অনুপযোগী শহরেও যা কিছু ছিল তার আর অবশিষ্ট নাই বলা যায় আগে জেলা শহরে সরকার কতৃক সরবরাহ করা পানি  পাশ্ব'বতি' নদীর পানি শোধন করে সরবরাহ করা হলেও  বত'মানে তা ভূগভ'স্থ পানির উপর নিভ'রশীল গ্রামে গঞ্ছে চাষাবাদ নদী খাল বিলের পানিতে সম্পন্ন করা হলেও বত'মানে নদী নালা খাল বিলও শুকিয়ে যাওয়ায় খাবার পানি সহ সবকিছুতেই ভূগভ'স্থ পানির উপর নিভ'রশীল আবার এই অতিরিক্ত পানি তোলার ফলে সেখানে দেখা দিয়েছে আসে'নিক সমস্যা শুধু তাই নয় নদীমাতৃক বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদী প্রায় শুকিয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে এক সময় যে নদীতে পানি থৈ থৈ করতো,বড় বড় পাল তোলা নৌকা ,লঞ্চ চলতো এখন সেখানে ধু ধু বালু চর আবার কোধাও হাটু পানি খরস্রোতা বহমান নদী  যেন শান্ত সরোবর কারন নদীগুলি উজানে ভারতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভাটি অঞ্চল বাংলাদেশে এসে পড়েছে ভারত উজানে বাধ দেওয়ায়  পানির প্রবাহ কমে গেছে বাংলাদেশ অংশে নদীর গতি আর নাই ,নদীতে চর পড়ায় অনেক জায়গায় চেনার উপায় নাই যে একসময় এখনে কোন নদী ছিল এব্যাপারেবাংলাদেশ প্রতিদিনধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে তা বশ গুরুত্বপুনশুধু তাই নয় আমাদের গজ্ঞা-কপোতাক্ষ,তিস্তা বহুমুখি প্রকল্প মাঠে মারা পড়েছে চাষাবাদে আমুল পরিবত' এসেছে ভাগ্য ভালো বিধায় আমাদের দেশের বিজ্ঞানী, কৃষিবীদ বিশেষজ্ঞগণ তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশে নতুন  নতুন অতি ফলনশীল ধান অন্যান্য ফসল উদ্ভাবন করায় দেশে খাদ্যের স্বয়ংপুনতা এসেছে যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেচে গভীর নলকুপের পানির উপর নিভ' হওয়ায় উৎপাদন খরছ বেশী পড়ছে কিন্তু যেভাবে মরুকরন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ভুগভ'স্থ পানির স্তর নিচের দিকে নামছে তাতে অচিরে গভীর নলকুপের পানি পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে আমাদের জন্য আরো ভয়ংকর দিন বোধহয় সামনে অপেক্ষা করছে ভারতের উজানে বাধ দিয়ে বাংলাদেশকে পানি থেকে বঞ্চিত করা আন্ত'জাতিক আইনের পরিপন্থী হলেও বাংলাদেশের দিক থেকে ব্যাপারে জোরালো কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে দেখা যায় না। শোনা যায় ভারত তার দেশের উপর দিয়ে আসা বাংলাদেশের নদী গুলিতে বাধ দিয়ে সেই পানি আন্তঃসংযোগ খাল খনন করে অন্যান্য রাজ্যে তা সবরাহের মহা-পরিকল্পনা অতি দ্রুত শেষ করার সিন্ধান্ত নিয়েছে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ উত্তরবঙ্গ মরুভুমি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র অ্ন্যদিকে কথিত আলনিনোর প্রভাবে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের দক্ষিনে লবনাক্ততা আরো বেড়ে যাবে। বিষেশজ্ঞদের আশংকা চাষাবাদ বন্ধ সহ খাবার পানির অসহনীয় অভাবে নিপতিত হবে বাংলাদেশ কিছুদিন আগেও টিপাইমুখী বাধ নিয়ে সরকার বিরোধীদল সহ চারিদিকে নানা কথাবাতা' শোনা যেত এখন তাও আর শোনা যায় না। কিন্তু তাদের প্রকল্প থেমে নেই ঠিকই বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।আন্তঃসংযোগ মহা প্রকল্পও তারা বন্ধ করবে তা আশা করা যায় না।  কারণ আমরা দেখছি বত'মান বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে ভারতের  বিজেপি সরকারের সম্পক' অন্য যে কোন সময়ের সরকারের তুলনায় অত্যন্ত ভাল। বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের সহযোগীতার কথা ষ্মরণে রেখে তার প্রতিদান হিসাবে ভারতীয় সকল চাহিদা পুরন করলেও সে তুলনায় ভারতীয়দের থেকে আশানুরুপ কোন উদ্যগ পরিলক্ষীত হয় নাই ট্রানজিট ছিল দরকষাকষির বাংলাদেশের একটি অস্ত্র তাও কানেকটিভিটির নামে ভারতের স্বাথ' দেখভালের ব্যবস্থা করা হলেও আজ অবধি ঝুলে আছে বাংলাদেশের পক্ষে তিস্তা চুক্তি
Photo :Google
মনে রাখতে হবে পানি জীবন সুতরাং তার পযা'প্ত  প্রাপ্যতা না থাকলে সকল প্রকল্প তা কৃষি হওক আর শিল্পই হওক থমকে যাবে তাই সময় এসেছে নতুন ভাবে পানি নিয়ে চিন্তা করবার। আমাদের প্রয়োজন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে সাথে ভুপৃষ্টে উপরিভাগে কিভাবে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যায় তার ব্যাবস্থা নেওয়া সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন নদী খাল ড্রেজিং/খননের মাধ্যমে তার নাব্যতা ফিরিয়ে আনা,ঢাকার বুড়িগঙ্গার মত অন্যান্য নদীগুলির পানি দুষন মুক্ত করে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে, সরকারী খাস জমিতে বড় বড় জলাধার নিমা' করা এবং বষা' সময় সেই পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে যেমনভাবে মধ্য এশিয়ার ভাটিতে অবস্থান কাজাকিস্থান,তুকি'মিনস্থান উজবেকস্থান হ্রদ বিভিন্ন জলাধারে পানি সংরক্ষন করে শুষ্ক মৌসুমে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে থাকে অন্যদিকে দ্বিপাক্ষিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমাদের নদ নদীর পানির প্রাপ্য হিস্যা আদায়ের জোরালো ভুমিকা নিতে হবে যদি তা না হয় তবে অবশ্যই আন্তজা'তিক অঙ্গনে দাবী তুলতে হবে খবরে প্রকাশ  বত'মানে আমাদের প্রধান মন্ত্রীকে জাতিসংঘের পানি নিয়ে উচ্চ পযা'য়ের প্যানেলে রাখা হয়েছে টেকশই উন্নয়ন লক্ষ(এসডিজি) অজ'নে কায'কর পদক্ষেপের জন্য এই প্যানেল করা হয়েছে যেখানে (এসডিজি) - সবার জন্য পানি স্যানিটেশন সুবিধা প্রাপ্তি এবং এর টেকশই ব্যাবস্থাপনার উপর আলোকপাত করা হয়েছে  আশা করা যায় ভারতের কাছে আমদের ন্যায্য পানি আদায়ে তা সহায়ক হবে।মনে রাখতে হবে বত'মান আওয়ামী লীগ সরকার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ব্যাথ' হলে আর কোন সরকারে পক্ষে তা আদায় করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না তাই বাংলাদেশ ভারতের মাঝে বিদ্যমান সমস্যার সমধানে যে কোন ব্যথ'তার দায় তাদেরই নিতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই ।  
https://youtu.be/IQPUPWUqv48
Facebook Post :24-04-2016

No comments: