দেখি নাই শুনেছি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শান্তি কমিটির পিতাকে হত্যা করতে।পড়েছিলাম এক মুক্তিযোদ্ধার ভাষ্য সম্ভবত নোয়াপাড়া যশোর এলাকার। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী সেনাদের সাথে যুদ্ধে টিকতে না পেরে পিছু হটে ভুল করে রাতে আশ্রয় নিয়েছিল এক শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের বাড়ি।আপ্যায়ন ভালো করেছিলেন সকালে পাকিস্তানী সেনাদের হাতে তুলে দিতে।বুঝতে পারেনি ক্লান্ত অবসন্ন দেহে খাবার খেয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সবাই।অন্ধকার থাকতে চেয়ারম্যানের মেয়ে জাগিয়ে ভোরে কচুকাটা হবে জানিয়ে সটকে পড়তে সহায়তা করে বাচিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধাদের।ত্রিশ লক্ষ আদম শহীদ হলেন,হাজার হাজার মা বোন বিরঙ্গনা হলেন,এদেশে থেকে যাওয়া কোটি কোটি মানুষ জীবন মৃত্যর সন্দীক্ষণে দাড়িয়ে থেকেও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করলো।কতো বড়ো ত্যাগ?তাদের প্রতি কতটুকু কৃতজ্ঞতা থাকা উচিৎ আমাদের ক্ষমতার তখতে তাউসে বসে ভোগবিলাসে মত্ত নেতাদের?সেই সকল শহীদের নাম লেখা হয়েছে কি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।বরং উল্টোটাই দেখতে পাই রাজাকার জামাত আলবদরদের নাম সকাল-বিকাল সব'ক্ষণ জবছি। প্রত্যেক মুক্তি যোদ্ধা থানা ইউনিট কি পারে না পুস্তকারে প্রকাশ করতে প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে প্রত্যেক শহীদের ইতিহাস।স্বাধীনতার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন সবা'গ্রে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানো।আমরা ভুলে গেছি ৩রা মাচ' যে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে গব' করি সেই পতাকা উড়ানোর দিন।ক্ষমতাবানরা যে পতাকা গাড়িতে উড়িয়ে যে বিশেষ মযা'দা সন্মান নিয়ে ঘুরে বেড়ান,তাদের মনে কি আছে সেই বীর সেনানীদের কথা।আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে একবারও কি জানিয়েছি তাদের শুভেচ্ছা?বাঘা সিদ্দিকী সাহেবের লেখাটা না পড়লে হয়তো আমিও জানতে পারতাম না সেই আগুনঝরা দিনের বীর সেনানী রব সাহেবরা নিজেদের স্মৃতি রোমন্থন করতে নিজেরাই একটা আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন।
ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা!আমাদের স্বাধীনতা আর ভারতের সহায়তা একই সুুত্রে গাথা।ভারতের আপামর জনগণের সহযোগিতার কথা ভুলবার নয়।ভারতীয় জনগণের প্রতি,তখনকার সেই সকল নেতা নেত্রীদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকতেই হবে।কিন্তু বত'মানে বন্ধুত্বের হিসাব করতে বসলে সব হিসাব নিকাশ যে মিলতে চায় না।সম্প্রতি দেশে অতি প্রচলিত বাক্য স্মরণ করে বলতে হয় আমরা গরম কড়াই থেকে এখন পড়ে গেছি একেবারে উত্তপ্ত উনুনে।কি নেয়নি,আর আমরা কি বাকি রেখেছি দিতে ভারতকে?বিনিময়ে বন্ধুত্ব নয় তাদের অতি সুবিধাভোগী কতৃত্ববাদই দেখছি চারিদিকে।
বত'মান সরকারের আন্তরিকতায় ভারতীয় সশস্ত্র স্বাধীনতাকামীদের নিরস্ত্র করে অশান্ত পুব'সীমান্তে শান্তি ফিরেছে।কৃতজ্ঞতাবোধ দেখিনা তাদের। উল্টো রক্তাক্ত হয় সীমান্ত এদেশের মানুষের রক্তে তাদের সীমান্ত রক্ষীদের জবাবদিহিবিহীন গুলিতে।আমরাও শিখেছি সীমান্তে গুলি খেতে আর পেরেছি গরু চোরাকারবারি নামে তা মেনে নিতে।শিখেছি ভারতের উজানে সব নদীর পানি বাধ দিয়ে তা অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমি করতে দেখেও কিছু না বলতে।পরিক্ষিত বন্ধু বলছি অথচ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বামা'র পক্ষ নেওয়া,এন আর সি এর মাধ্যমে অনিবন্ধিত প্রায় বিশ লক্ষ বাংলা ভাষীদের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলে বাংলাদেশে ঠেলে দেবার পায়তারাকে তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চোখ বন্ধ করে আছি।এর নাম কি কৃতজ্ঞতা?মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট কিন্তু অসাম্প্রদায়িক ধম'বণ'নিব্বি'শেষে শান্তি-সম্প্রীতির দেশ আমাদের বাংলাদেশ।কাশ্মীরে মুসলিম নিধন চলে,দিল্লিতে মুসলিম নিধন চলে,মসজিদে আগুন দেয়।আমরা বন্ধুর প্রতি এতই কৃতজ্ঞ যে বন্ধুকে একবারও মানবতার কথা সহনশীলতার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারি না। কিন্তু আমাদের সেই কালজয়ী নেতা যুদ্ধ বিধধস্ত দেশের সকল ক্ষেত্রেই বিপয'স্ত অবস্থায় দাড়িয়েও ভারতীয় নেতাদের বলতে পিছপা হননি যে" কাশ্মীরের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিৎ"। আজ বাংলাদেশের স্থপতি,অসাম্প্রদায়িক নেতা সেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উতযাপনে এশিয়ার অতি কট্টর সাম্প্রদায়িক জংগী নেতা দামোদর মোদিকে প্রধান বক্তা হিসাবে এনে অসাম্প্রদায়িক আদশে' আদশ'বান মানব বংগবন্ধুকে আর একবার হত্যা করতে যাচ্ছে সম্ভবত তারই হাতে গড়া সংগঠন।এই রকম নতজানু কৃতজ্ঞতার জন্য কি আমার স্বাধীনতা?
স্বাগতম জানাই মমতা ব্যানার্জি,সোনিয়া গান্ধী,প্রনব মুখার্জি মনমোহন সিং এর মতো নেতা নেত্রীদের আগমণকে।কিন্তু মোদিজীর জন্য নয়।শুনছি মোদিজীকে দেশের সবো'চ্চ সম্মাননা দিতে যাচ্ছে সরকার।বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তার জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মাননাতো প্রথমেই একমাত্র ইন্দিরা গান্ধীই পেতে পারেন।পেতে পারেন ততকালীন ভারতীয় নেতৃত্ত্বের অনেক নেতা তাদের জাতীয় অনেক ব্যাক্তিত্ত।কিন্তু সেই সম্মাননা একজন বিতর্কিত ব্যাক্তিকে দেওয়া হবে কেনো?এতো সেই অপাত্রে কণ্যা দান সম ।তাইতো কেহ করছে প্রতিবাদ কেহ কেহ দিয়েছে সম্ভবত নিঃস্ফল প্রতিরোধের ডাক।কি আর আছে করবার আমজনতার?রাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসে কোনো সরকারই সাধারণ মানুষের মনের কথা বোঝে না বুঝতে চায় না,বুঝলেও মানতে চায় না।আমাদের একটা ঐতিহ্য তৈরী হয়ে গেছে যারা যখনই যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না ক্ষমতার বাহিরে কেহ না বললে ক্ষমতাসীনরা তা হ্যা বলবে আর ক্ষমতাসীনরা হ্যা বললে বাহিরের সবাই না বলবে।যে কোনো অবস্থায় ক্ষমতাসীনরা প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় সব্ব'শক্তি ব্যবহার করে তাদের পরিকল্পনা সেই হ্যা বাস্তবায়ন করতে চাইবেই।আপামর মানুষ চাইবে শান্তি-শৃংখলার স্বাথে'সকলের কাছ থেকে সহনশীল দায়িত্বশীল আচরণ।
মনে পড়ে কাশ্মীরি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গোটা কাশ্মীরকে সারা দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে অমানবিক দমন-নিপীড়নের খড়গ যখন চাপিয়ে দিয়েছিলেন মোদি সরকার,তখন আমিরাতের আমীর মোদিজীকে তার সফরের সময় সে দেশের সর্বোচ্চ খেতাবে ভূষিত করেছিলেন। আলজাজিরার নিউজের নিচে মন্তব্য দিয়েছিলাম "They are traitor of the Muslim Ummah"।আজ দিল্লি ম্যাসাকারের পর মোদিজী আবার পেতে যাচ্ছেন সংখ্যাগরীষ্ট আর এক মুসলিম দেশের সব্বো'চ জাতীয় খেতাব।কথাটা মনে করতে যেনো অনুভুত হলো কানটা ধরে কারো মারা সজোরে চপেটাঘাত।ভাষা হারিয়ে ফেলেছি বলবার।কাপুরুষ,তাই কিছুই নেই করবার।শুধু নিজেই নিজেকে এবং সেই সাথে রাস্ট্রযন্ত্র তোমাকেও চুপিচুপি কেবলই জানাই ধিক্কার।https://youtu.be/IQPUPWUqv48
No comments:
Post a Comment